• ‘ম্যাজিশিয়ান নই যে হাত ঘোরালে টাকা ঝরবে’, কেন্দ্রকে তোপ মমতার
    এই সময় | ২১ মে ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: ‘আমি ম্যাজিশিয়ান নই যে, গুপি বাঘার মতো হাত ঘোরাবো আর আকাশ থেকে টাকা ঝরে পড়বে’— ফুলবাড়িতে আয়োজিত সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার জেরে রাজ্য সরকারকে যে উন্নয়নের ক্ষেত্রে পদে পদে বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে সে কথাই মঙ্গলবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। এমনকী, জিএসটি নেওয়ার পরেও রাজ্যের শিল্পোদ্যোগীদের গাড়ি আটকে দিয়ে দু’বার করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এসব চলতে পারে না।’

    রাজ্যের প্রাপ্য আটকে রাখা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারেরও নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে তাতেও রাজ্যের উন্নয়ন যে থমকে নেই, এদিন কয়েকশো কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করে সেই বার্তা দেন মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের বাধা পেরিয়েও রাজ্য যে ক্ষুদ্র শিল্প থেকে কন্যাশ্রী, বাংলার বাড়ি থেকে স্বাস্থ্যসাথী এমন নানা প্রকল্পে দেশের মধ্যে এক নম্বরে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাল্টা কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘তোমরা টাকা দিচ্ছো না। তার পরেও বাংলা পথ দেখাচ্ছে। নানা ক্ষেত্রে বাংলা এক নম্বরে। তোমরা টাকা দিতে না-পারো, আমরা কিন্তু দেব। মানুষের পাশেই থাকব।’

    কেন্দ্র বনাম রাজ্য, প্রাপ্য নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ এবং লড়াই দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তবে তার মধ্যে বিজেপি নেতাদের লাগাতার ‘কুৎসা’ এবং ভুয়ো প্রতিশ্রুতিতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। নাম না-করে নির্মলা সীতারামনের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘একজন উত্তরবঙ্গে বন্ধ চা বাগান খুলে দেবেন বলেছিলেন। পরে আর তাঁকে দেখা যায়নি।’ ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে বিজেপির নাম না করেও কটাক্ষ করেন তিনি।

    তাঁর অভিযোগ, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ চালু করার কথা বললেও পরে আর কেউ ও পথ মাড়াননি। একমাত্র বাংলাতেই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সারা জীবন চলবে।’ কুৎসা প্রসঙ্গেও তাঁর সাবধান বাণী, ‘যাঁরা কুৎসা করছে তাদের করতে দিন। আমরা নিজেদের কাজ করে যাব। তবে বাংলার মানুষ চিরকাল বদনাম সহ্য করবে না।’

    এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সোশ্যাল মিডিয়া নিয়েও সরব হন। তাঁর অভিযোগ, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ফেক’ প্রচার চলছে। একজন যেটাকে ভালো বলছেন, অন্যজন সেটাকেই খারাপ বলছেন।’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদিবাসীদের জমি কেনাবেচা রুখতে রাজ্য সরকার ফরেস্ট পাট্টার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, যাতে কেউ কেনাবেচা করতে না-পারে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘উত্তরবঙ্গে যে শিল্প হচ্ছে, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ, বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। ২০১১ সালের আগে উত্তরবঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৮৪০ মেগাওয়াট। এখন সেটা বেড়ে ৩৫০০ মেগাওয়াট হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)