• মুর্শিদাবাদ হিংসা: ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্ট পেশ, স্থানীয় নেতা ও পুলিশের ভূমিকায় উঠল প্রশ্ন
    আজ তক | ২১ মে ২০২৫
  • ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন, ২০২৫-এর প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক হিংসার তদন্তে কলকাতা হাইকোর্টে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। এতে অনেক চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। যাতে স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

    রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ১১ এপ্রিল, ধুলিয়ান পৌরসভার প্রাক্তন সভাপতি মেহবুব আলমের নেতৃত্বে কয়েকজন হিংসার সূত্রপাত ঘটান। তৃণমূল নেতা এবং স্থানীয় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কার্যত, নীরব ভূমিকায় দেখা যায় পুলিশকে। তবে, প্রতিবেদনে স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে মেহবুব আলমের উল্লেখ ভুল বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ তিনি কাউন্সিলর নন বরং ধুলিয়ানের প্রাক্তন সভাপতি। আলম বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে হিংসা ঘটান বলে জানা যাচ্ছে।

    'রিপোর্টে বিধায়কের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে'
    এছাড়াও, রিপোর্টে স্থানীয় এক বিধায়কের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি ১১ এপ্রিল হিংসা ও ভাঙচুর দেখে চলে যান, এরপর ১২ এপ্রিলও হিংসা অব্যাহত ছিল।

    রিপোর্টে স্থানীয় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। হিংসার সময় স্থানীয় পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় এবং অনুপস্থিত ছিল। যাদের বাড়িঘরে আগুন লাগানো হয়েছে তাদের সাহায্য করেনি।

    '১১৩টি বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত'
    রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ঘটনায় আক্রমণকারীরা তাদের মুখ ঢেকে রেখেছিল যাতে তাদের পরিচয় গোপন করা যায়। বেতবোনা গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ১১৩টি বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাঙ্গাকারীরা মন্দিরগুলিতেও ভাঙচুর চালিয়েছে। সংঘর্ষের সময় বেশিরভাগ মানুষকে নিকটবর্তী মালদা জেলায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন জোর করে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করে। ১১ এপ্রিল বেলা আড়াইটের পরে আক্রমণ আরও তীব্র হয়।

    হরগোবিন্দ দাস (৭৪ বছর) এবং তাঁর ছেলে চন্দন দাস (৪০ বছর) হত্যার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের বাড়ির প্রধান দরজা ভেঙে, কুড়ুলের কোপ মারা হয়।

    'তদন্ত কমিটি আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে'
    কলকাতা হাইকোর্ট কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের কমিটিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) রেজিস্ট্রার (আইন) যোগিন্দর সিং রয়েছেন। বিচারকদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ আইনী পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডব্লিউবিএলএসএ) সদস্য সচিব সত্য অর্ণব ঘোষাল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিচার বিভাগীয় পরিষেবার (ডব্লিউবিজেএস) রেজিস্ট্রার সৌগত চক্রবর্তী।

    রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, হিংসার ঘটনা পরিকল্পিত ছিল। এটিকে সংগঠিত অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করেছে। এর সঙ্গে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের তাদের সম্পত্তি ও জীবনের নিরাপত্তার সঙ্গে তাদের বাড়িতে পুনর্বাসিত করার কথা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (আজ তক)