অয়ন ঘোষাল: সাঁতরাগাছিতে সিগন্যাল বিপর্যয়। চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা। হাওড়া স্টেশন থেকে একের পর এক দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল। দেরিতে ছাড়ছে অনেক দূরপাল্লার ট্রেন। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, জানে না রেল কর্তৃপক্ষও। গত ১৮ মে সাঁতরাগাছি রেল ইয়ার্ড উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। ১৮ মে কাজ শেষ হলেও ত্রুটি রয়েছে, মানল দক্ষিণ পূর্ব রেল। ত্রুটি রয়ে গিয়েছে নন-ইন্টারলকিং সিগন্যালে। এর জেরে সোমবার থেকেই হাওড়া ডিভিশনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত। মঙ্গলবার সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে।
আজ কোন কোন ট্রেন বাতিল
হাওড়া-পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস
হাওড়া-বারবিল-হাওড়া এক্সপ্রেস
দিঘা-হাওড়া এক্সপ্রেস
হাওড়া-দিঘা এক্সপ্রেস
সিগন্যাল সমস্যার চাপ এসে পড়েছে হাওড়ায়। সেখানে বিপুল সংখ্যক যাত্রী প্রবল গরমে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। হাওড়া স্টেশনের উপর চাপ কমাতে দক্ষিণপূর্ব রেল দুটি স্টেশনকে বিকল্প হিসেবে বেছে নেয়। একটি হল সাঁতরাগাছি এবং অন্যটি হল শালিমার। শালিমার স্টেশন আপাতত ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সেখানে ট্রেনের সংখ্যা অনেক কম। এরকম এক অবস্থায় সাঁতরাগাছি স্টেশনে নন ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় সমস্যার কারণে একের পর এক ট্রেনের যাত্রা বা বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে হাওড়া স্টেশনের উপরে কী পরিমাণ চাপ পড়েছে তা হাওড়া স্টেশনে পা রাখলেই বোঝা যায়। সবচেয়ে বড় কথা হল, এই সমস্যার সমাধান কবে তার কোনও উত্তর রেলের কাছে নেই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ১৮ মে কাজ শেষ হয়ে গেলেও টেকনিক্যাল সমস্যা থেকে গেছে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায়। হাওড়া স্টেশনের উপর থেকে চাপ কমানোর জন্যই সাঁতরাগাছি রেল ইয়ার্ডকে ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাওড়ার বিকল্প হিসাবে সাঁতরাগাছিকে গড়ে তুলতে অনেক দিন ধরেই কাজ হচ্ছে সেখানে। সাঁতরাগাছি স্টেশনের প্রায় এক লক্ষ বর্গমিটার পরিসরযুক্ত পাঁচতলা ভবন, পার্কিং লট এবং কোনা এক্সপ্রেসওয়েকে যুক্ত করে র্যাম্প তৈরি হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বসেছে নতুন লাইন, সিগনালিং ব্যবস্থাকেও উন্নত করার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। রেল ঘোষণা করে গত ১৮ মে সেই সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ খাতায়কলমে রবিবার কাজ শেষ হলেও সমস্যা মেটেনি বলেই যাত্রীদের একটা বড় অংশের অভিজ্ঞতা।
রেলের একটা অংশের দাবি, ১৮ মে কাজ শেষ হওয়ার পরেও নন-ইন্টারলকিং সিগন্যাল ব্যবস্থায় ত্রুটি থেকে গিয়েছে। নন-ইন্টারলকিং সিগন্যাল ব্যবস্থা সঠিক ভাবে কাজ না-করায় সোমবার থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। মঙ্গলবার সেই সমস্যা আরও তীব্রতর আকার নেয়। কবে সমস্যা মিটবে, সদুত্তর নেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কাছেও। বাতিল করা হয়েছে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনও। অসংখ্য লোকাল-মেল-এক্সপ্রেস বাতিল। যেগুলো চলছে তা-ও অনির্দিষ্ট সময়ে চলছে। দেরির কোনও সীমাপরিসীমা নেই।