স্নাতকে কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি চলতি মাসে শুরু করা নিয়ে সংশয়
আনন্দবাজার | ২১ মে ২০২৫
স্নাতক স্তরে অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি মাসে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে কিনা, তা এখনও অনিশ্চিত। ভর্তির ক্ষেত্রে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। এই মামলার জেরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে উদ্যোগী হয়েও তা স্থগিত রেখেছে। তবে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মঙ্গলবার তাদের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিজস্ব সব ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করে দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে স্নাতক স্তরে অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তির ক্ষেত্রে কী করণীয়, তা জানতে চেয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতর রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ চেয়েছে। তবে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও বার্তা অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছ থেকে আসেনি। উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক মঙ্গলবার জানান, খুব শীঘ্রই তাঁরা সেই পরামর্শ পাবেন বলে আশাবাদী। তার পরে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে মামলার জটে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি আটকে রয়েছে রাজ্যের ৩৯টি সরকারি স্কুলেও। কারণ, সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতেও মেধা তালিকা অনুযায়ী ভর্তি নেওয়া হয়।
এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এম টেক-সহ নিজস্ব সব ভর্তি প্রক্রিয়ায় ওবিসি সংরক্ষণের বিষয়ে উল্লেখ থাকবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই বিষয়ে অন্য নির্দেশ এলে তা পরবর্তী ক্ষেত্রে মানা হবে। এরই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্যে স্নাতকোত্তরে ভর্তির প্রক্রিয়া পয়লা জুলাই থেকে শুরু হবে। ফল প্রকাশের আগেই ভর্তির পরীক্ষা নেওয়া শেষ করার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
গত বছর থেকে রাজ্যের অধিকাংশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে। গত বছর এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল জুনের মাঝামাঝি। কিন্তু শিক্ষা মহলের বক্তব্য ছিল, অত দেরিতে ভর্তি চালু হওয়ায় বহু পড়ুয়া বিকল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন। ফলে, নভেম্বর মাস পর্যন্ত কয়েক দফায় ভর্তি প্রক্রিয়া চালিয়েও কলেজগুলিতে অনেক আসন পূরণ করা যায়নি। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হবে কিনা, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এ বার ভর্তির অভিন্ন পোর্টালে বেশ কিছু নতুন বিষয় যোগ করা হচ্ছে। তার মধ্যে একটি হল চ্যাটবট। কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে পড়ুয়ারা তাঁদের ভর্তি সংক্রান্ত যে কোনও প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
গত বছর ভর্তিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছিল কল সেন্টারের মাধ্যমে। কিন্তু তাতে কিছু সমস্যাও উঠে আসে। এ বার সেই কল সেন্টারের সঙ্গে থাকবে কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে উত্তর দেওয়ার পদ্ধতি। বাংলা, ইংরেজি বা হিন্দি— যে কোনও ভাষায় প্রশ্ন করা যাবে। যদি প্রশ্নের নির্যাস খুব স্পষ্ট না-ও হয়, তা হলেও বিষয়টি কী বলতে চাওয়া হচ্ছে, তা ধরতে পারবে কৃত্রিম মেধা।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল থাকায় গত বছর ভর্তি হয়েও পড়তে না চাওয়া প্রায় ১৪০০ প্রার্থীর টাকা ফেরত দেওয়া যায়নি। এই টাকা ঠিক ভাবে ফেরত দিতে এ বার বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তি আনা হয়েছে। বাড়ানো হবে পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম। টাকা যাতে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফেরত চলে যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হতে পারে।