• ৩৯ বছর পরে ফের ঘোড়ায় চেপে বক্সায়, এলিফ্যান্ট সাফারিরও পরিকল্পনা
    এই সময় | ২১ মে ২০২৫
  • পিনাকী চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার

    আর হেঁটে নয়, এ বার পর্যটকদের নিয়ে দুর্গম পাকদণ্ডী বেয়ে বক্সা পাহাড়ে উঠবে টাট্টু ঘোড়া। উত্তরবঙ্গ সফরে এসে ইতিমধ্যে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই শেষ নয়, পরের ধাপে ওই পাহাড়ি পথে হাতি সাফারির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ওই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন আলিপুরদুয়ারের শিল্পপতি অরিন্দম ঘোষ।

    বক্সা পাহাড়ে পর্যটন প্রসারে ঘোড়া ব্যবহারে সিলমোহর দেন মমতা। তবে বক্সা পাহাড়ের ওই এলাকা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন হওয়ায় উপস্থিত বনকর্তাদের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। বক্সা পাহাড়ে এসএসবির যে চৌকি রয়েছে, তাদের থেকে যাতে কোনও আপত্তি না আসে, সে জন্য একজন নোডাল অফিসারকে সশস্ত্র সীমাবলের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন তিনি। ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রজননের মরশুমে বন্ধ থাকে দেশের সমস্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের পিঠে চাপিয়ে বক্সা পাহাড়ে ঘোড়ার ওঠানামা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

    ইতিহাস বলছে, ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত বক্সা পাহাড়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যাতায়াতের জন্য ঘোড়া ও খচ্চরের ব্যবহার ছিল। ওই উদাহরণকে সামনে রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর সামনে পর্যটনের প্রসারে ঘোড়া ও কুনকি হাতি ব্যবহারের প্রস্তাব রাখেন অরিন্দম। আইনি জটিলতা খতিয়ে দেখে তাঁর ওই প্রস্তাব লুফে নেন মুখ্যমন্ত্রী।

    অরিন্দম বলেন, ‘বক্সা পাহাড়ে পর্যটন বিকাশে ঘোড়া ও হাতির ব্যবহার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। ঘোড়া গৃহপালিত পশু হওয়ায় আইন নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের পহেলগাম, বৈষ্ণোদেবী মন্দির ও অমরনাথ যাত্রায় ঘোড়া ব্যবহার করা হয়।’

    বক্সা পাহাড়ের কুড়ি জন উদ্যোগী যুবককে বেছে নিয়ে ঘোড়া চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন অরিন্দম। নিজের খরচেই পরীক্ষামূলক ভাবে পাঁচটি ঘোড়া তিনি কিনে দেবেন বক্সা পাহাড়ের ওই বেকার যুবকদের। তিনি বলেন, ‘ধাপে ধাপে আরও ঘোড়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমার দিক থেকে সব ধরনের সহায়তা থাকবে। তাতে বক্সা পাহাড়ের বেকার যুবকদের একটা কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’

    বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, ‘বক্সা পাহাড়ে ঘোড়া চলাচলের বিষয়ে আমরা ছাড়পত্র দেব। ভবিষ্যতে যাতে ওই পাহাড়ি পথে হাতি সাফারি করা যায় সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে রাজাভাতখাওয়ায় একটি পিলখানা তৈরি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ পেলে হাতি সাফারিও চালু হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)