জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: জাল কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দিয়ে প্রধান হওয়ার অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও চলছে। তারই মধ্যে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন পঞ্চায়েত প্রধান। তাহলে কি তিনি সত্যিই জাল সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন? সেই প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। যদিও এই ইস্তফার কারণ হিসেবে নিজের শারীরিক অসুস্থতাকেই দর্শিয়েছেন উমা ঘোষ। এই বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, নির্বাচনে জিতে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছিলেন তৃণমূলের উমা ঘোষ। এরপর অভিযোগ ওঠে, তিনি জাল সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন। তিনি-সহ প্রাক্তন ও বর্তমান পাঁচ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এরপরেই অভিযোগ ও মামলা দায়ের হয়। কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলা চলছে। সেই আবহে জানা গেল, পঞ্চায়েত প্রধান উমা ঘোষ পদত্যাগ করেছেন। ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৫ তারিখ তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে প্রধানের পথ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ব্লক অফিসে লিখিত দিয়েছিলেন। বুধবার তাঁকে বিডিও অফিসে ডাকা হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে উমা ঘোষ বলেন, “আমার এতটাই শরীর খারাপ, যে আমি পঞ্চায়েতে গিয়ে কাজ করতে পারছি না। আমি তিন মাস আগে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলাম। দল আমাকে ছাড়তে চাইছিল না। আমি অসুস্থ তাই পদত্যাগ করলাম।” বনগাঁর বিডিও কৃষ্ণেন্দু ঘোষ ওই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। গত বছর অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে জাল তপশিলি শংসাপত্র তৈরির অভিযোগে মামলা করা হয় পাঁচজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উমা দাস ঘোষ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় ফর্মফিলাপে নিজেকে জেনারেল কাস্ট বলে জানান। পরবর্তীকালে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচন করে উমা দেবী প্রধান হন। সেখানে নিজের এসসি সার্টিফিকেট জমা দেন। ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ২৩টি আসন রয়েছে। ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ২৩টির মধ্যে ১৯ টিতে জয়লাভ করে। তারপর থেকেই উমা ঘোষ প্রধানের পদ সামলাচ্ছিলেন। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আমরা যে পাঁচজনের জাল শংসাপত্র বানিয়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ার অভিযোগ এনেছিলাম, তার মধ্যে উমা ঘোষের নাম রয়েছে। শুনেছি উনি পদত্যাগ করেছেন। যারাই জাল শংসাপত্র তৈরি করে বিভিন্ন পদে বসে আছে, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য চেষ্টা করব।”