• ট্রাফিক গার্ড সাফে আধ কোটি টাকা বরাদ্দ লালবাজারের, ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া রুখতে বর্ষার আগেই সতর্ক পুলিশ
    প্রতিদিন | ২১ মে ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: সামনেই বর্ষা। ভয় ম‌্যালেরিয়া আর ডেঙ্গুর। তার আগেই কলকাতার প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ড ও সঙ্গে ট্রাফিক বিভাগের সাতটি শাখার দপ্তর সম্পূর্ণ সাফসুতরো করার সিদ্ধান্ত লালবাজারের। সঙ্গে ট্রাফিক গার্ডের বাইরে করা হবে সবুজায়ন। তার জন‌্য আধ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন লালবাজারের কর্তারা। একইসঙ্গে বর্ষার আগেই কলকাতার প্রত্যেকটি থানা ও সশস্ত্র বাহিনীর বারাক পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

    সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জেলা ও কমিশনারেটের পুলিশকর্তারাও রাজ্যের থানাগুলি পরিষ্কার রাখার জন‌্য নির্দেশ দিয়েছেন। কলকাতার অনেক থানার পাশেই ফেলে রাখা হয় আটক করা গাড়ি। সেই গাড়ির অংশে জল জমে যাতে মশা ডিম না পাড়তে পারে, সেই ব‌্যাপারেও থানাগুলিকে সতর্ক করেছে লালবাজার।

    কলকাতা পুলিশের আওতায় রয়েছে ২৬টি ট্রাফিক গার্ড। ভাঙড় এলাকা কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পর সর্বশেষ ট্রাফিক গার্ডটি তৈরি হয়েছে ভাঙড়ে। বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ ওঠে, প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ড পরিষ্কার রাখা হয় না। কয়েকটি ট্রাফিক গার্ডের পরিস্থিতি অস্বাস্থ‌্যকরও। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ট্রাফিক গার্ডের লাগোয়া বারাক থাকে। সেখানে বিশ্রাম নেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা। সেখানে তাঁরা খাওয়াদাওয়া করেন ও অনেক সময় রাতেও থাকেন। ফলে গার্ডের পরিবেশ যদি অস্বাস্থ‌্যকর হয়, তবে তাঁদের সমস‌্যা হতে পারে। সেই কারণে গার্ডগুলি সাফসুতরো করার সঙ্গে প্রয়োজনমতো সেগুলি মেরামতিও করা হতে পারে। ট্রাফিক গার্ডের ভিতরটাই শুধু নয়, তার বাইরের চারপাশের অংশও যাতে পরিষ্কার থাকে, সেই ব‌্যবস্থাও নিচ্ছে লালবাজার। কারণ অনেক সময়ই ট্রাফিক গার্ডের বাইরের অংশে রাখা থাকে অপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস। সেখানে যাতে জল জমে মশার লার্ভা তৈরি না হয়, সেদিকে নজর রাখছেন পুলিশকর্তারা। সেগুলি পরিষ্কার করে সবুজায়ন ও সৌন্দর্যায়নের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। তবে গাছের ঝোপ থেকে যাতে মশা ও পোকামাকড় না হয়, সেই ব‌্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

    লালবাজার জানিয়েছে, সারা বছরভর ট্রাফিক গার্ড পরিষ্কার রাখা ও গাছপালা দেখভালের জন‌্য বাইরের সংস্থাকে বরাত দেওয়া হচ্ছে। ২৬টি ট্রাফিক গার্ড ছাড়াও উত্তর কলকাতার টালার ট্রাফিক ট্রেনিং স্কুল, ডিসি (ট্রাফিক) সাউথের দপ্তর, হ‌্যাকনি ক‌্যারেজ শাখা, স্টেশনারি, ক্লোদিং স্টোর-সহ সাতটি দপ্তরও একইভাবে সাফসুতরো রাখা ও সেখানে সবুজায়নের ব‌্যবস্থা করা হচ্ছে। এর জন‌্য লালবাজার প্রায় ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

    এদিকে, বর্ষায় রোগের প্রাদুর্ভাব রুখতে প্রত্যেকটি থানার আশপাশে রেখে দেওয়া পুরনো গাড়িগুলি সরানোর ব‌্যবস্থা করা হচ্ছে। থানার ভিতর ও চারপাশও পরিষ্কার রাখতে বলেছেন পুলিশকর্তার। এ ছাড়াও পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজার ও অন‌্যান‌্য বিভাগের বাড়িগুলিও পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক বছর আগে শহরের একাধিক পুলিশ আবাসনের বাসিন্দারা ডেঙ্গুর মতো রোগে ভুগেছেন। ফলে এখন থেকেই পুলিশ আবাসনগুলি পরিষ্কার রাখার ব‌্যাপারে ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আবাসন ও বিভাগীয় ভবনগুলির চারপাশের নর্দমায় যাতে জল প্রবাহিত হয় এবং জল কোথাও জমে না থাকে, সেই ব‌্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)