• যত দোষ মাছির! সারাদিন চারপাশে ভনভন, ‘জাস্টিস’ চেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ রাজ্যে
    এই সময় | ২১ মে ২০২৫
  • বেশ কয়েকবছর আগে রিলিজ় হওয়া সিনেমা ‘মক্ষী’-র কথা মনে আছে? খুন হয়ে যাওয়ার পরে মাছি হয়ে পুনর্জন্ম হয়েছিল এক চরিত্রের। আর ‘মাছি-জন্মে’ একাই ভিলেনকে শায়েস্তা করেছিল সেই চরিত্র। সেই সিনেমায় মাছি হিরো হলেও, বাঁকুড়ায় মাছি ভিলেন। যার অত্যাচারে জেরবার হয়ে রাস্তায় নামলেন বাসিন্দারা। বুধবার অবরোধ করলেন ৬০ জাতীয় সড়ক। বাঁকুড়া-১ ও ছাতনা ব্লকের মধ্যে কাশিবেদিয়ায় অবরোধ হয়েছিল। তার জেরে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ে অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।

    মাছির অত্যাচারে জেরবার বাঁকুড়া-১ ও ছাতনা ব্লক এলাকার কাশিবেদিয়া, পড়্যাশোল, তেঘরি, দলদলি, জগন্নাথপুর, ঘোড়গড়িয়্যা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এ দিন অবরোধ করেছেন। মিনিট ২০ অবরোধ চলার পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। তার পরে জাতীয় সড়কের পাশে একটি হ্যাচারির সামনে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা।

    ‘রাতে মশা দিনে মাছি, এই নিয়ে কলকাতায় আছি’, ঈশ্বর গুপ্তের প্রবাদপ্রতিম এই কবিতা এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে। শতাব্দী প্রাচীন ওই কবিতায় মশা-মাছি সহ্য করার কথা বলা হলেও, আধুনিক যুগে কেন হবে? দিনে-রাতে-খাবার পাতে সবসময়ে মাছি দেখলে রাগ হওয়ারই কথা। বাঁকুড়া-১ ও ছাতনা ব্লকের একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদেরও তাই হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় ৩টি বেসরকারি মালিকানাধীন হ্যাচারি রয়েছে। আর সেই হ্যাচারির জন্যই লাগোয়া ১৫টি গ্রামে মাছির উপদ্রব বেড়েছে। অবস্থা এমনই যে, দিনভর মাছি ভনভন করে যাচ্ছে গোটা এলাকায়। রাখা যাচ্ছে না কোনও খাবার। অভিযোগ, খেতে বসেও মুখে ঢুকে যাচ্ছে মাছির ঝাঁক। প্রতিদিনের জীবনে এই সমস্যার কারণে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে সকলেরই। তাঁদের হুঁশিয়ারি, মাছির তাণ্ডব বন্ধ না হলে হ্যাচারিগুলি বন্ধ করে দেবেন তাঁরা। যদিও হ্যাচারির তরফে এই বিষয়ে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। তবে সেখানকার এক কর্মী জানিয়েছেন, মাছির সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে ভালো ওষুধ ব্যবহার করা হবে। সাধারণ মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন, সেই বিষয়টিও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

    এই ঘটনাতেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। বিজেপির বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষের অভিযোগ, প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তৃণমূল নেতারা হ্যাচারি থেকে কাটমানি পায়। প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস পায় না। বাঁকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে এই সমস্যা হচ্ছে। গ্রামের মানুষ আমাদের জানিয়েছেন। কোথায় গাফিলতি রয়েছে তা প্রশাসনিকভাবে দেখা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)