পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে গ্রামের সমস্ত দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। আর তিনিই কি না সংসার চালাতে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দুটো টাকা রোজগারের আশায়। রাইপুরের সোনাগাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান স্বপন রজক মনে করেন, কোনও কাজই ছোট নয়। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব সামলে মাস গেলে পাঁচ হাজার টাকা ভাতা পান স্বপন। কিন্তু এই দুর্মূল্যের বাজারে সেই টাকায় তাঁর সংসার চলে না।
স্বপন উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ছোট সংসার। তাই দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোটাতে প্রতিদিন ভোর চারটের সময়ে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন স্বপন। ইঞ্জিন ভ্যান চালিয়ে তিনি এলাকায় ইমারতি দ্রব্য পরিবহণ করেন। সেগুলো আবার নিজের হাতে উঠিয়ে নামিয়েও দেন। তবে এখানেই শেষ নয়। এর পাশাপাশি পেট চালাতে তিনি শাল পাতার ব্যবসাও করেন।
তবে এ সবের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে কোনও খামতি রাখেন না। সকালে ভ্যান চালানোর পর বাড়ি ফিরে সকাল ১০টায় অফিসে যান। আবার অফিস থেকে ফিরে ফের ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এলাকাবাসী তাঁর কাজে ভীষণ খুশি। গ্রামের মানুষ জানাচ্ছেন, এলাকার প্রতিটি মানুষ যাতে কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সে দিকে কড়া নজর রয়েছে স্বপনের। স্থানীয় বাসিন্দা আফরোজ আলমের কথায়, ‘পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পরেও ওর মধ্যে কোনও অহঙ্কার নেই। ও সকলের সঙ্গেই সব সময় যোগাযোগ রাখে। মানুষের সেবা করে। এর পাশাপাশি আবার অফিস টাইমে নিজের কাজেও যাচ্ছে। এ রকম একজন নেতাকে পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি।’
২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় কদমাগড় সংসদ থেকে নির্বাচিত হয়ে পঞ্চায়েতের প্রধান হন স্বপন। তাঁর কথায়, ‘আমি যে ভাতা পাই তাতে সংসার চালানো বেশ কষ্টকর। আমি ২০০৭ সাল থেকে তৃণমূলে রয়েছি। গ্রামের মানুষও আমায় খুব সম্মান করে। আমি প্রায় সাত বছর ধরে এ ভাবেই কাজ করে চলেছি।’