মিল্টন সেন, হুগলি: গাড়ির ১৫ বছর বয়স হলেই স্ক্র্যাপ করতে হবে এটা বাস্তবসম্মত নয়। বাসের বয়স স্বাস্থ্য বিচার করে নির্ধারণ করা উচিত। বাস এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষেই রয়েছেন। বুধবার এই কথাই বলেছেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।
ভাড়া বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি পূরণ না হওয়ায় চলতি সপ্তাহের ২২,২৩ ও ২৪ তারিখ তিন দিনের বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল একাধিক বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন। সেই প্রসঙ্গে বুধবার রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, "১৫ বছর বয়সের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য যে দাবি বাস অ্যাসোসিয়েশন গুলি করেছিল, যেহেতু এনজিপি অর্ডার ছিল পনের বছরের কেএমডি এলাকায় যাত্রিবাহী গাড়িগুলি স্ক্র্যাপ করতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী মেয়াদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আইনগত দিক থেকে আদালতে আমরা বাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষেই মতামত জানিয়েছি। বলেছি যে বাসের বয়স স্বাস্থ্যের উপরেই নির্ধারণ হওয়া উচিত।“ মন্ত্রী বলেন, “১৫ বছরের পুরনো হলেই কোনও গাড়িকে স্ক্র্যাপ করে ফেলা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ এখন উন্নত মানের যন্ত্রপাতি এসেছে। উচ্চমানের প্রযুক্তি সম্পন্ন গাড়ি বাজারে এসেছে। বিএস৬ পর্যায়ে আমরা রয়েছি। এখন ১৫ বছরের গাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে এটা বাস্তবসম্মত আমরা মনে করি না। যে গাড়ির মালিক যত সহকারে গাড়ি পরিচালনা করেন। সেই গাড়ি যদি ভাল থাকে। তাহলে কেন সেই গাড়ি আমরা ১৫ বছরে স্ক্র্যাপ করব? যেহেতু আইনি অর্ডার রয়েছে, তাই আমরা আইনের পথেই বাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে আছি। মামলা চলছে। তাই অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। বাস অ্যাসোসিয়েশনকেও আমরা বলেছি, আপনারা অপেক্ষা করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গেই রয়েছি।"
এদিন মন্ত্রী আরও বলেছেন, "মূলত দু’টি সংগঠন এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। আমরা বুধবার পরিবহন দপ্তর বাস অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে নিয়ে মিটিং করেছি। এদিন তিনটি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি-সহ ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। সেখানে পরিবহন সেক্রেটারি ও অ্যাসোসিয়েশনগুলির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ধর্মঘট কখনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হবে। যেহেতু ইলেকট্রনিক্স সার্ভিলেন্স লাগানো রয়েছে। তাই নিয়ম ভাঙলেই ই-চালান এর মাধ্যমে কেস চলে যাচ্ছে। এটাই মূলত বাস মালিকদের অভিযোগ। সেই অভিযোগগুলো আমরা শুনেছি। সেগুলি কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটাও আমরা চেষ্টা করব। বাস অ্যাসোসিয়েশনগুলিকেও বলা হয়েছে ড্রাইভার এবং কনডাক্টরদের আপনারা কাউন্সিলিং করুন। যাতে রাস্তায় তাঁরা নিয়ম মেনে চলেন। আমরা স্পিড ম্যানেজমেন্ট পলিসি এনেছি রাজ্যে। যে কোনও রাস্তায় সর্বাধিক কত গতিবেগে গাড়ি চলতে পারে সেটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ রোড সেফটি আমাদের কাছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ এর মাধ্যমে আমাদের দুর্ঘটনা আরও কমাতে হবে। নিয়ম নীতি মেনেই আমাদের সকলকে চলতে হবে। তবে ধর্মঘট কখনোই সমাধানের পথ নয় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে। রাজ্য সরকার বাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে রয়েছে। আপনারা সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিপর্যস্ত করে, এমন কোনও আন্দোলন কর্মসূচি কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।“