আন্দোলনের নামে বিকাশ ভবনে তাণ্ডব! পুলিশ-চিহ্নিত শিক্ষকদের শোকজ পর্ষদের
প্রতিদিন | ২২ মে ২০২৫
ধীমান রক্ষিত: আন্দোলনের নামে বিকাশ ভবনে তাণ্ডব এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশের চিহ্নিত করা সেইসব শিক্ষকদের এবার শোকজ করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সাতদিনের মধ্যে শো-কজের জবাব চেয়েছে পর্ষদ। শিক্ষাদপ্তরের নির্দেশই এই পদক্ষেপ বলে খবর। উল্লেখ্য, গত ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষকরা কী কী বেআইনি কাজে যুক্ত হয়েছিলেন, শোকজ চিঠিতে তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
পর্ষদের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা জড়ো হয়েছিলেন। ওই দিনের ঘটনার ছবি এবং ভিডিও থেকে অনেককেই চিহ্নিত করা গিয়েছে, যাঁরা সেদিন বেআইনি কাজ করেছিলেন। বিকাশ ভবনে স্কুলশিক্ষা দপ্তর সহ একাধিক সরকারি অফিস রয়েছে। বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ফেলা হয়েছিল। নষ্ট করা হয় সরকারি সম্পত্তিও। গেটে নতুন তালা ঝুলিয়ে বিকাশ ভবনের কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষকে বেআইনিভাবে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয়েছিল। যাঁরা বিকাশ ভবনে কোনও পরিষেবার জন্য এসেছিলেন, তাঁদেরও হেনস্তা করা হয়। রাতে পুলিশি হস্তক্ষেপের পর বিকাশ ভবন থেকে তাঁরা বেরতে পেরেছিলেন। সেই সময়েও তাঁদের সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা কেন এই ধরনের আচরণ করলেন, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, শো কজের জবাবে তা জানাতে হবে।
বারবার অভিযোগ উঠেছে যে শিক্ষক আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক দলের উসকানি রয়েছে। আন্দোলনকারীরা কার্যত দু’ভাগ হওয়ার পর বুধবার এই আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক সংযোজন ঘটে। চাকরিহারা শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এদিন আন্দোলনকারীদের একাংশ বিধাননগরে বিজেপি অফিসে যান। পরে আন্দোলনের নেতা সুমন বিশ্বাস জানিয়েছেন, এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের চাকরিহারারা নিজেদের চাকরি বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইতে বিজেপি অফিসে যাওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এক কলমের আঁচড়ে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। হাজারও টানাপোড়েনের পর সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন। তবে অশিক্ষক কর্মীরা আপাতত চাকরিহারা। আবারও নতুন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এসএসসিকে। তবে আর পরীক্ষা দিতে নারাজ ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। টানা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ১৫ মে সেই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বিকাশ ভবন।