সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেন্ট্রাল ল্যাব সুপার স্পেশালিটি ব্লকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে রোগী ও তার পরিবারের লোকেরা অযথা হয়রানির অভিযোগে সরব হয়েছেন।
এতদিন পুরনো বিল্ডিংয়ে মেডিসিন আউটডোর ও ব্লাড সেন্টারের মাঝে সেন্ট্রাল অ্যাপ ছিল। আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়ে কাছাকাছি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা ব্যবস্থা ছিল। সেখান থেকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকে সেন্ট্রাল ল্যাব সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় রোগীদের রক্ত ও অন্যান্য পরীক্ষার জন্য অনেকটা দূরে যেতে হচ্ছে।
সমস্যার কারণ আরও অনেক। নাম নথিভুক্তকরণ ও রিকুইজিশনের জন্য ল্যাবের পুরনো জায়গায় লাইন দিতে হচ্ছে। সেখানে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নাম নথিভুক্ত করে রিকুইজিশন নিয়ে সুপার স্পেশালিটি ব্লকে যেতে হচ্ছে। নমুনা দেওয়ার জন্য আবার সেখানে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এই হয়রানির জন্য অনেক রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এদিন আলিপুরদুয়ার থেকে এসেছিলেন সন্তোষ সরকার। সকাল সাড়ে আটটায় এসে লাইনে দাঁড়িয়ে নাম নথিভুক্ত করেন। তারপর নমূনা দেওয়ার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়ান। তিনি বলেন, দু›জায়গায় লাইন দিতে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে। শরীরে ধকল যাচ্ছে। কখন রক্ত দিতে পারব জানি না। দুপুর দুটো বেজে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একটা দিন নষ্ট হবে। একই অভিযোগ করেছেন মাথাভাঙার মায়া বর্মন। দু›বার লাইনে হয়রানির পাশাপাশি খোলা আকাশের নীচে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বৃষ্টি নামলে কি হবে। রোগীরা ভিজে লাইনে দাঁড়াবে নমূনা দেওয়ার জন্য? সুপার স্পেশালিটি ব্লকের সামনে নমুনা দেওয়ার জন্য যেখানে লাইন দিতে হচ্ছে সেখানে মাথার উপর কোনও ছাউনি নেই। খোলা আকাশের নীচে রোদে পুড়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সবমিলিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেন্ট্রাল ল্যাবে রক্ত ও অন্যান্য পরীক্ষা করানোটা এখন রোগীদের কাছে রীতিমতো আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। হাসপাতালের ডাক্তারদের একাংশের অভিযোগ, সুপার স্পেশালিটি ব্লক যে পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাস্তবে তার সঙ্গে কোনও মিল নেই। পরিকল্পনার বাইরে থাকা অনেক বিভাগ ঢুকিয়ে সুপার স্পেশালিটি পরিষেবাকে বিঘ্নিত করার চক্রান্ত চলছে। যে কারণে আজও পূর্ণাঙ্গরূপে সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা এখানে চালু হয়নি। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেন্ট্রাল ল্যাব নিয়ে রোগীদের হয়রানির কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, এটা সাময়িক। সবে আমরা সুপার স্পেশালিটি ব্লকে সেন্ট্রাল ল্যাব সরিয়েছি। একটু গুছিয়ে নিয়ে রোগীদের একই জায়গায় সব কাজ যাতে হয় এবং খোলা আকাশের নীচে যাতে দাঁড়াতে না হয় তার ব্যবস্থা করা হবে। রোগীদের লম্বা লাইন। -নিজস্ব চিত্র