• আলিপুরদুয়ারে স্ক্রাব টাইফাসে মৃত্যু পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার
    বর্তমান | ২২ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়ি: দীর্ঘ একমাস লড়াইয়ের পর হেরে গেল আলিপুরদুয়ারের ছোট্ট ঋতম। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ঋতম কুণ্ডু (১০) মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ঋতম স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত ছিল। তবে তার ডেথ সার্টিফিকেট স্নায়ুজনিত জটিল রোগকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। 

    উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেন, একমাস আগে আলিপুরদুয়ার থেকে এক কিশোর আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। ছেলেটিকে সঙ্কটজনক অবস্থায় আনা হয়েছিল। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে ওর শরীরে স্ক্রাব টাইফাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেই সঙ্গে কোমর্বিডিটিও ছিল। সেই মতোই চিকিৎসা চলছিল, কিন্তু কোমর্বিডিটি থাকার কারণে ছেলেটির অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছিল। দু’সপ্তাহ আগে ওর শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হয়। জটিল স্নায়ুরোগের শিকার হয়ে কোমায় চলে যায়। পিকু ওয়ার্ডে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার রাত ১টার পরে ছেলেটি মারা যায়। 

    আলিপুরদুয়ার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দনগরে থাকত ঋতম। ম্যাক উইলিয়াম হাইস্কুলের ছাত্র ছিল সে। জ্বরের উপসর্গ থাকায় গত ১২ এপ্রিল ওই কিশোরকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ২০ এপ্রিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরিবারের লোকজন মেডিক্যালে না নিয়ে প্রথমে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। সেখানেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ২৫ এপ্রিল মেডিক্যালে ভর্তি করে। সঙ্গে সঙ্গে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে কিশোরের চিকিৎসা শুরু করে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে টানা প্রায় একমাস চিকিৎসা চলে। অবশেষে মঙ্গলবার পড়ুয়ার মৃত্যু হয় মেডিক্যালেই। 

    কিশোরের বাবা রাজা কুণ্ডু বলেন, জ্বরের উপসর্গ থাকায় ছেলে অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেছিল। ওকে আলিপুরদুয়ার থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাই। অনেক চেষ্টা চালিয়েও ওকে বাঁচাতে পারলাম না। 

    আলিপুরদুয়ারে স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, বিশেষ এক পোকার কামড়ে স্ক্রাব টাইফাস হয়। জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুপ্রিয় চৌধুরী বলেন, ওই পড়ুয়ার রক্তের রিপোর্টে স্ক্রাব টাইফাসের উপস্থিতি মিলেছিল। পড়ুয়ার বাড়ি যেখানে সেখানে অনেক গাছপালা, জঙ্গল ও ডোবা আছে। এলাকাটি স্যাঁতস্যাঁতে। অপরিষ্কার এলাকায় ওই পোকার উপদ্রব হয়। সেই জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারকে জায়গাটি পরিষ্কার করে দিতে বলা হয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)