নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: বর্ষার মরশুম শুরু না হলেও দফায় দফায় ঝড়বৃষ্টিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিদ্যুৎ বণ্টন পরিষেবায়। বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পরিকাঠামো। জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার থেকে দফায় দফায় ঝড়বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে ২০৩টি বিদ্যুতের খুঁটি। বিকল হয়ে গিয়েছে ১১২টি ট্রান্সফরমার। স্বাভাবিকভাবেই পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকায়।
দপ্তরের উত্তর দিনাজপুরের রিজিওনাল ম্যানেজার মানু চন্দ্র বর্মণের বক্তব্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সংস্থার ক্ষতির পাশাপাশি পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। তারপরও দুর্যোগ কাটিয়ে উঠে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। জেলায় অন্ততপক্ষে সংস্থার ১৫২ টি রক্ষণাবেক্ষণ টিম পরিষেবা সচল রাখার জন্য কাজ করেছে। দুর্যোগের জেরে ভেঙে গিয়েছে ২০৩টি বিদ্যুতের খুঁটি। বিকল হয়ে গিয়েছে ১১২ টি ট্রান্সফরমার। সবক্ষেত্রেই সংস্থা যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে পরিষেবা সচল করেছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী গত রবিবার থেকে দফায় দফায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে বৃষ্টি। তাতে শহর ও গ্রামগুলির বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন হয়েছে। শুকিয়ে যাওয়া কুলিক নদীতেও বেড়েছে জলস্তর। রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে রায়গঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা তথা জেলাজুড়ে। এতে গত কয়েকদিন গাছের মোটা মোটা ডাল ভেঙে বেশকিছু বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। কোথাও বৃষ্টির ফলে মাটি নরম হয়ে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি উল্টে গিয়েছে। তাতে খুঁটির সঙ্গে নষ্ট হয়েছে প্রচুর বিদ্যুৎবাহী তার। সেইসঙ্গে ভোল্টেজ আপ ডাউন, বজ্রপাতের মতো নানা কারণে বিকল হয়েছে ট্রান্সফরমার। যার জেরে রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমার প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে।
ঝড়বৃষ্টির জন্য রায়গঞ্জের রামপুর, ভাতুন, জগদীশপুর, বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু গ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। তিনদিন পর্যন্ত স্বাভাবিক পরিষেবা ছিল না বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। আবার ইসলামপুর মহকুমার চোপড়া ব্লকে আশারামগছ, গোরায়তবস্তি, জগথারার মতো কয়েকটি গ্রামে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা অন্তত একদিন ধরে বিঘ্নিত ছিল।
কোনও কোনও জায়গায় তিনদিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়নি। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সোমবার ও মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ বণ্টন পরিষেবা স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে বলে সংস্থা জানিয়েছে। কয়েকটি প্রান্তিক গ্রামে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি থাকায় পরিষেবা স্বাভাবিক করতে দুই থেকে তিনদিন সময় লেগেছে। নিজস্ব চিত্র।