সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: কোচবিহার পুরসভা ও কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির বিরোধ আরও চরমে। সোমবার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স, মিউটেশন ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়লেন পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রবিবাবুকে বলেন, ট্যাক্স বাড়ানো যাবে না। রবিবাবু ফাইল হাতে নিয়ে বলেন, এক পয়সাও বাড়াইনি। মুখ্যমন্ত্রী মিউটেশনের কথা জিজ্ঞাসা করলে রবিবাবু সেক্ষেত্রেও বলেন, এক পয়সাও না। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, তাহলে ওঁরা বলছে কেন? রবিবাবু জানান, ওঁরা মিথ্যা বলছে, বারবার মিথ্যা বলছে। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ডিএমকে বলছি। ডিএম ক্রস চেক করে আমাকে জানাবেন। তুমি বলছ, আমি তোমাকে বিশ্বাস করছি। আমি ক্রস চেক করব।
মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ট্রেড লাইসেন্স, মিউটেশন ফি বৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগের পর এদিনের বৈঠকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ রীতিমতো ফাইলে নথিপত্র নিয়ে যান উত্তরকন্যায়। এদিকে, রবিবাবু যখন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় তখন কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে ট্রেড লাইসেন্স ও দোকানের মিউটেশন ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি তুলে ধরা হয়।
মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেছিলেন, ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে যে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়েছে তা মিথ্যা। বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তাঁর ওই মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে তথ্য তুলে ধরে যুক্তি দেন কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মতিলাল জৈন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বলেছেন আমরা নাকি ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছি। আমরা ভুল তথ্য দিচ্ছি না উনি ভুল বলছেন সেটা আমরা যে নথি দিচ্ছি সেটাই বলবে। জনগণ, মুখ্যমন্ত্রী বিচার করবেন।
কোচবিহার পুরসভার সঙ্গে জেলা ব্যবসায়ী সমিতির দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ চলছে। একদিকে বাজার সংস্কার নিয়ে যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনই ট্রেড লাইসেন্স ফি ও মিউটেশন ফি বৃদ্ধি নিয়ে ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে। এর আগে এসব ইস্যুতে ব্যবসায়ীরা একবার বন্ধ পর্যন্ত ডেকেছিলেন। এবার বিষয়টি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেছেন তাঁরা। কিন্তু দুঁদে রাজনীতিবিদ রবিবাবুও তাঁর যুক্তিতে অনড়। তিনিও মুখ্যমন্ত্রীকে ফি বৃদ্ধি করা হয়নি বলে জানালেন এদিন। এখন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জেলাশাসক সবটা খতিয়ে দেখলে আগামী দিনে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।