নদীয়া দক্ষিণে বিজেপিকে সরাতে ফের দেবাশিসেই ভরসা তৃণমূলের
বর্তমান | ২২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: লক্ষ্য ছাব্বিশের নির্বাচন। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারজন্য শাসক দল ফের দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরেই ভরসা রেখেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই সাংগঠনিক জেলার প্রায় সব বিধান সভাতেই পর্যুদস্ত হয়েছিল তৃণমূল। তারপর দেবাশিসবাবুর হাত ধরেই উপ নির্বাচনে সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। উপনির্বাচনে দু’টি আসন পদ্ম শিবিরের কাছ থেকে আসন ছিনিয়ে আনে শাসক দল। ভোট বেড়েছে গত লোকসভা নির্বাচনেও। আর তাতেই আস্থা বেড়েছে রাজ্য নেতৃত্বের। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে ফের তাঁর হাতেই ব্যাটন তুলে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।
ছাব্বিশে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের সমস্ত জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় ফের দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরেই ভরসা রেখেছে দল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকটি নির্বাচনে দলের পরাজয়ের কারণ হিসেবে উঠে আসে দলীয় কোন্দল। একাধিক গোষ্ঠীর রেষারেষির কারণে মুখ থুবড়ে পড়ে শাসকদল। তৃণমূলের একাংশের মতে, দলের একাধিক গোষ্ঠীর খেয়োখেয়ির যে সুবিধা বিজেপি পেয়েছিল প্রথম দফায় সভাপতি হওয়ার পর তার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন দেবাশিসবাবু। বুথ স্তরে রাজনীতি করতে করতে শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি হয়েছিলেন। কিন্তু কোনওদিনই কোনও ‘লবি’র অথবা গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। বরং সকলের সঙ্গেই তাঁর সদ্ভাব ছিল। তারজন্য দায়িত্ব যাওয়ার পর বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করতে তাঁর খুব একটা অসুবিধে হয়নি। তার ফলও পেয়েছে দল।
২০২১ সালে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় নবদ্বীপ ছাড়া আর কোথাও তৃণমূল জিততে পারেনি। সেখানে দেবাশিসবাবুর নেতৃত্বে উপনির্বাচনে শান্তিপুর এবং রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয় তৃণমূল। ২০২৪ সালের বিজেপি রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে জিতলেও তাদের ভোট কমেছে। উল্টে তৃণমূলের ভোট বাড়ে প্রায় ২ শতাংশ। সেই সূত্রেই আশার আলো দেখছে তৃণমূল।
যদিও বিজেপির রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল যা ভাবছে, তা তো হবেই না। বরং এবার এখানকার পাশাপাশি গোটা রাজ্যে তৃণমূল হাতে গোনা আসন পাবে।
দেবাশিসবাবু বলেন, ছাব্বিশের নির্বাচনে এই সাংগঠনিক জেলায় শুধু নয়, গোটা রাজ্যে তৃণমূল ভালো ফল করবে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন। রাজ্যে ইস্যুর পাশাপাশি বুথভিত্তিক বিষয়গুলি নিয়ে মানুষের কাছে যাবে তৃণমূল। বিজেপিকে হারাতে প্রতিটি বুথে সংগঠনকে শক্তিশালী করা হবে। তাই স্বঘোষিত নেতাদের নয়, আন্তরিকতা আছে এবং দলের প্রতি আনুগত্য রয়েছে, এমন লোকজনের উপরেই দায়িত্ব থাকবে। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে বুথস্তরের সংগঠনকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানোর জন্য যা করার দরকার তা করা হবে। ‘ম্যান টু ম্যান’ জনসংযোগ করতে বলা হবে। কারণ এবার আমাদের ভালো ফল করতেই হবে। এই জেলা এক সময় যথেষ্ট ভালো অবস্থায় ছিলাম আমরা। সেই অবস্থায় ফিরে যাওয়া অসম্ভব নয়। তারজন্য শুধু কর্মীদের নয়, দলের নেতাদেরও আন্তরিক হতে হবে। সেই কাজটাই করার চেষ্টা করব। দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়।