শান্তিপুরের দু’টি স্নানের ঘাট সংস্কারের জন্য প্রায় এক কোটি বরাদ্দ প্রশাসনের
বর্তমান | ২২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: শান্তিপুর শহরবাসী তো বটেই, দক্ষিণ নদীয়ার একটি বড় অংশের মানুষ পুণ্যস্নান করতে আসেন এমন দুটি জীর্ণ ঘাটকে সংস্কার করে নবরূপে প্রস্তুত করতে উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। এই কাজে সেচ ও জলপথ দপ্তরের তরফে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। আগামী তিন অর্থবর্ষজুড়ে ধাপে ধাপে ব্যয় হবে বিপুল এই টাকা। ঘাট সংস্কারের পাশাপাশি নজর দেওয়া হবে, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিকটিতেও।
নবদ্বীপের পর নদীয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মন্দির শহর শান্তিপুর। গঙ্গার পূর্বপাড়ের এই জনপদ ঠিক যতখানি ঐতিহাসিক, ততটাই আধ্যাত্বিক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রও বটে। প্রায় সব পুজোপাঠ এবং ধর্মীয় উৎসব রীতিমতো সাড়ম্বরে পালন হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। আর এরই সূত্র ধরে শান্তিপুরের বাছাই করা কিছু গঙ্গার ঘাটে নিয়ম করে হয় পুণ্যস্নানের ভিড়। বিশেষ করে মহালয়া, মকর সংক্রান্তি, নীলষষ্ঠীর সহ অন্যান্য তিথি। ফলে শান্তিপুর তো বটেই, দক্ষিণ নদীয়ার বিস্তীর্ণ অংশের লক্ষাধিক মানুষ আসেন সেই সমস্ত ঘাটগুলিতে স্নান করতে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, এরকমই গুরুত্বপূর্ণ দু’টি স্নানের ঘাট শ্যামচাঁদ ঘাট এবং ষষ্ঠীতলা ঘাট দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জীর্ণ পড়েছিল। শান্তিপুরের মানুষের দাবি ছিল, ঘাটগুলি সংস্কার করে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা। সেই বিষয়টি পরবর্তীতে বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে এবং ‘মেনশন’ পর্বে তুলে ধরেছিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। শুধু তাই নয়, তৎকালীন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে এই টাকা বরাদ্দ করাতে উদ্যোগ নেন বিধায়ক। অবশেষে শান্তিপুরের বিধায়কের সেই উদ্যোগে সিলমোহর দিল রাজ্যের সেচদপ্তর। সোমবারই তাদের তরফে কাগজে কলমে প্রশাসনিক ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, সব মিলিয়ে এই দুইটি ঘাট সংস্কারে বরাদ্দ হয়েছে, ৯০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৯১ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই এই বিপুল টাকা খরচ হলে খোল-নলচে বদলে যাবে ঘাটদুটির। যদিও তিনটি ধাপে এই টাকা দেবে রাজ্য সরকার। ২০২৫-২৫ অর্থবর্ষে বরাদ্দ হয়েছে ১২ লক্ষ টাকা। ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষে ৩২ লক্ষ টাকা এবং সর্বশেষ ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষে বরাদ্দ হয়েছে ৪৬ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৯১ টাকা। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই টেন্ডার ডাকা হবে। সেই টেন্ডার অনুযায়ী প্রস্তুত করা হবে ওয়ার্ক অর্ডার।
বিষয়টি নিয়ে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, আমি বিধায়ক হওয়ার পরেই একটি তালিকা তৈরি করেছিলাম সাধারণ মানুষের কী কী দাবি রয়েছে। ধাপে ধাপে সেই সমস্ত দাবি পূরণ করছি। ঘাট সংস্কারের বিষয়টি আমি বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে তুলে ধরেছিলাম। তাতে আমাদের রাজ্যের সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। সমস্ত শান্তিপুরবাসীর তরফ থেকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। বহু মানুষের পুণ্যস্নান এবং আস্থার সঙ্গে জড়িয়ে এই ঘাট দু’টি। নবরূপের সংস্কার হলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে স্নান করতে পারবেন। সুনিশ্চিত হবে নিরাপত্তাও। নিজস্ব চিত্র