• ভাড়া বৃদ্ধি হলেও গোরাবাজার মার্কেটের পরিকাঠামো বেহাল
    বর্তমান | ২২ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দীর্ঘ কয়েক দশক পর বাজারের ভাড়া কয়েক গুণ বাড়িয়েছে পুরসভা। অথচ পরিকাঠামোর উন্নয়নে কানাকড়িও খরচ করা হচ্ছে না। ফলে শতছিন্ন ছাউনির নীচে প্লাস্টিক ও ছাতা মাথায় বসে ব্যবসা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সাধারণ মানুষকেও ছাতা হাতে বাজারে ঢুকতে হয়। বেশি বৃষ্টি হলে বাজারের মধ্যে কয়েক ফুট জল দাঁড়িয়ে যায়। দমদমের গোরাবাজার মিউনিসিপ্যাল মার্কেটের এই নিদারুণ অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। ক্ষুব্ধ ক্রেতারাও। পুরসভা উল্টে ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে দায় ঠেলেছে।

    জানা গিয়েছে, দমদম পুরসভার অধীনে রয়েছে এই প্রাচীন বাজারটি। আগে সপ্তাহে দু’দিন বাজার বসত। ১৯৫৩ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বসছে। এক সময় ইজারাদার দোকান থেকে ভাড়া সংগ্রহ করতেন। পরে পুরসভা নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়। ২০২৩ সালে কাঁচা সব্জি, চাল, মাছ ও মাংসের স্টলের ভাড়া ছিল দৈনিক একটাকা। এছাড়া রাস্তার দিকে মুখ করে বসা স্থায়ী দোকানের ভাড়া ছিল প্রতি স্কোয়ার ফুটে ৪০ পয়সা। বাজারের ভিতরের দিকে মুখ করে বসা স্থায়ী দোকানের ভাড়া স্কোয়ার ফুট প্রতি ৩৫ পয়সা। সে বছর পুরসভা ভাড়া বাড়িয়ে স্কোয়ার ফুট পিছু পাঁচ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা আন্দোলন শুরু করেন। শেষপর্যন্ত ২০২৪ সালে পুরসভা ও ব্যবসায়ীদের আলোচনায় নতুন ভাড়ার তালিকা তৈরি হয়। তাতে বলা হয়, স্থায়ী দোকানের ক্ষেত্রে প্রতি স্কোয়ার ফুটে তিন টাকা ও আলু, সব্জি,মাছ, মাংসের কাঁচা বাজারের ভাড়া প্রত্যেক স্কোয়ার ফুটে দু’টাকা হবে। 

    বর্তমানে সাড়ে পাঁচ বিঘা জায়গার উপর স্থায়ী ও কাঁচা বাজার মিলিয়ে মোট ৪১৮টি দোকান রয়েছে। অথচ কাঁচা বাজারের পরিকাঠামো বেহাল বললেও কম বলা হয়। ২০০৬ ও ২০১৮ সালে এই বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তারপরও পরিকাঠামো সেই তিমিরেই। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ বাজারে আসেন। ভুগতে হচ্ছে তাঁদেরও। এক সব্জি দোকানদার বলেন, ‘আগে আমাকে মাসে ৩০ টাকা দিতে হতো। এখন দিতে হয় ৩০০ টাকা। অথচ বর্ষায় জল পড়ে। অনেক সময় বাজার বন্ধ হয়ে যায়। পানীয় জলের সু-বন্দোবস্ত নেই। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর নিজেদের টাকায় দোকান তৈরি করতে হয়েছে। পুরসভা ভাড়া বাড়ালেও পরিষেবা দিচ্ছে না।’ এই বাজারের ব্যবসায়ী ও দমদম ক্যান্টনমেন্ট বিজনেসম্যান অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘পুরসভা এই বাজারে বহুতল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানতে চাননি। এরপর ভাড়া বাড়ালেও পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুরসভা। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা চরম সমস্যায় রয়েছেন।’ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান হরেন্দ্রনাথ সিং বলেন, ‘বাজারে আগুন লাগার পর বহুবার নতুন করে তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাতে অনেকেই সম্মত হননি। তাই বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)