এই সময়, পুরুলিয়া: গত কয়েকদিন ধরে বেহাল দশা রেল পরিষেবার। হাওড়া থেকে পুরুলিয়াগামী ট্রেনগুলি কখন এসে পৌঁছবে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। মঙ্গলবার তার জন্য নাজেহাল হতে হয়েছে যাত্রীদের।
বুধবারও পরিস্থিতির খুব উন্নতি হয়নি। এ দিনও পুরুলিয়া এক্সপ্রেস এবং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস অস্বাভাবিক দেরি করে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ার রেলযাত্রীদের ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকারি বাস পরিষেবা।
বুধবার সকাল থেকেই এমনই ছবি দেখা গিয়েছে পুরুলিয়ার এসবিএসটিসি বাস ডিপোয়। পুরুলিয়া থেকে কলকাতা অথবা দুর্গাপুর, আসানসোল, বর্ধমান, টাটা, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা যাওয়ার বাসগুলি ধরার জন্য লম্বা লাইন দেখা যায় যাত্রীদের। ভলভো থেকে একাধিক দূরপাল্লার সরকারি বাসের উপরেই এখন ভরসা রাখছেন যাত্রীরা।
নিত্য রেলযাত্রীরা সাফ বলে দিচ্ছেন, ‘ট্রেনের উপরে ভরসা করলে কোথাও যেতেই পারব না। তুলনামূলক ভাবে বাস ঠিক সময়েই চলছে। ফলে তার উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে।’ দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার কর্মী উত্তম রায়ের মন্তব্য, ‘বাসের টিকিট বিক্রি গত কয়েকদিনে অনেকটাই বেড়েছে। বহু মানুষ ঠায় অপেক্ষা করছেন টিকিট পাওয়ার জন্য।’
পুরুলিয়া স্টেশন থেকে যে সমস্ত যাত্রী একটা সময় পর্যন্ত ট্রেনে
র উপরেই ভরসা করতেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করেছে। সাঁতরাগাছি–পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের এখানে আসার কথা ছিল সোমবার বেলা ১২টা পাঁচ মিনিটে। সেই ট্রেন মঙ্গলবার সকালে পৌঁছয় পুরুলিয়া স্টেশনে।
আবার হাওড়া–পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের মঙ্গলবার পৌঁছনোর কথা ছিল রাত সাড়ে ১০টায়। সেই ট্রেন ১২ ঘণ্টা পরে আদ্রায় এসে থামে। সেখানেই যাত্রা–বিরতি করে দেওয়া হয়। বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাওড়া থেকে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ছাড়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
তবে রেল দপ্তরের ভাষ্য অন্য ধরনের। দক্ষিণ–পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওপি চারন জানাচ্ছেন, এ দিন অবস্থার খানিকটা উন্নতি হয়েছে। তিনি বলছেন, ‘সাঁতরাগাছিতে কিছু সমস্যা হওয়ায় ট্রেন চলাচলে এত দেরি হয়েছে। এখানে ব্লক নিয়ে নন– ইন্টারলকিং কাজ হচ্ছিল। নতুন উন্নত সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার সময়ে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। ফলে বহু ট্রেন বাতিল হয়ে যায়।’
বুধবার ছ’টি মেল এক্সপ্রেস এবং পাঁচটি লোকাল বাতিল করা হয়। তবে ১৭টি মেল এক্সপ্রেসের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।