এই সময়, কালনা: একটু এগোলেই একটি করে স্পিডব্রেকার! এমনকী ফাঁকা মাঠের পাশেও স্পিডব্রেকার! যার জেরে ক্ষতি হচ্ছে বাসের। জ্বালানি বেশি পুড়ছে। দিতে হচ্ছে লেট ফাইন। এ নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা না–পেয়ে বুধবার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখলেন কালনা–বর্ধমান রুটের বাসচালক ও কর্মীরা।
এ দিন কালনার ধাত্রীগ্রামে সার দিয়ে বাস দাঁড় করিয়ে দেন চালকরা। আগাম ঘোষণা ছাড়াই আচমকা বাস বন্ধের ঘটনায় দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রীরা। তবে যে কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে তা সমর্থন করেছেন অধিকাংশ যাত্রী।
কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল বলেন, ‘স্পিডব্রেকারের বিষয়টি আগেই নজরে এসেছে। পুলিশ ও পূর্ত (সড়ক) দপ্তরের সঙ্গে জয়েন্ট ইনস্পেকশন করা হয়েছে। স্কুল বা হাসপাতালের সামনে স্পিডব্রেকার রাখতে হবে। তার বাইরে কোথায় কোথায় স্পিডব্রেকার সরানো যেতে পারে বা উচ্চতা কমানো যেতে পারে, তার একটা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সোমবার আসতে বলেছি। এর পরেও কোনও সমস্যা থাকলে তা দেখা হবে।’
মহকুমাশাসক আরও জানান, সোমবার জেলায় রোড সেফটির মিটিং রয়েছে। সেখানেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
বাসকর্মীরা জানান, কালনা–বর্ধমান রাস্তা সংস্কারের পরে বেশ কিছু নতুন স্পিডব্রেকার বসানো হয়েছে। সবমিলিয়ে স্পিডব্রেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫০। এখনও নতুন স্পিডব্রেকার তৈরি করা হচ্ছে। কিছুটা অন্তর ছয়–সাতটা করে স্পিডব্রেকার রয়েছে।
বাসচালক রাজু গুপ্ত বলেন, ‘এই রুটে ৬০টি বাস চলে। প্রতিটি স্টপেজে ছ’টা করে স্পিডব্রেকার রয়েছে। স্পিডব্রেকারের কারণে গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। তেল বেশি লাগছে।’ আর এক চালক অভিজিৎ মণ্ডলের কথায়, ‘অনেক প্যাসেঞ্জারই স্পিডব্রেকারের কারণে এই রুট এড়িয়ে চলায় বাসযাত্রীর সংখ্যা কমছে। আর বাড়ছে ক্ষতি।’
এক বাস কন্ডাক্টর সৌরভ সিংহরায় বলেন, ‘স্পিডব্রেকারের কারণে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী, বা অন্য গাড়িতে অন্তঃস্বত্ত্বাদের নিয়ে যেতে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে একাধিক বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সুরাহা হয়নি। তাই স্পিডব্রেকার তোলা না হলে চাকা গড়াবে না।’
এ দিন বাস বন্ধের খবর পেয়ে ধাত্রীগ্রামে পৌঁছন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি সন্দীপ বসু। এক বাসকর্মীর পা ধরে অনুরোধ করতে দেখা যায় তাঁকে। সন্দীপ বলেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। মহকুমাশাসক সোমবার দেখা করতে বলেছেন।’