• আয়ুর্বেদিক পরিষেবা দিতে উদ্যোগী বিশ্বভারতী, ঔষধি বাগানে সাজছে অ্যান্ড্রুজ হাসপাতাল
    প্রতিদিন | ২২ মে ২০২৫
  • নিজস্ব সংবাদদাতা, বোলপুর: দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ মেমোরিয়াল হাসপাতালকে আয়ুষ হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। সেজন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে জলাশয়, পুকুর তৈরি-সহ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে আয়ুর্বেদিক বাগানের। পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় তৈরি হতে চলেছে যোগা পার্কও। যেখানে বিনোদন কেন্দ্রের মতোই অভ্যন্তরীণ পরিবেশের তুলনায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য উদ্যানে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে থাকবে ঔষধি গাছও।

    বর্তমানে সপ্তাহে পাঁচদিন সকাল ন’টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। শীঘ্রই আয়ুর্বেদের চিকিৎসা ছাড়াও যোগ থেরাপি-সহ নানা পরিষেবা মিলবে এই হাসপাতাল থেকেই। অর্থাৎ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষর তরফে ঢেলে সেজে উঠছে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ হাসপাতাল।

    উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতন থেকে শ্রীনিকেতন যাওয়ার রাস্তায় আপাতদৃষ্টিতে দেখে নিছকই গ্রামীণ হাসপাতাল মনে হলেও সেই হাসপাতালের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে বিস্তৃত ইতিহাস। স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চার্লস এফ অ্যান্ড্রজ ও মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর।

    ১৯১২ সালে চার্লস এফ অ্যান্ড্রজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাক্ষাৎ হয়েছিল ইংল্যান্ডে। এরপরই কবির আমন্ত্রণেই শান্তিনিকেতন আসেন। পরে কবির সঙ্গেই একযোগে গ্রামের মানুষদের জন্য চিকিৎসা পরিষেবার কাজ শুরু করেন অ্যান্ড্রুজ। সাধারণ মানুষের সমস্যায় বন্ধুর মতো পাশে থাকতেন বলে এলাকাবাসীরা তাঁকে ‘দীনবন্ধু’ আখ্যা দেন।

    কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর ১৯৪৫ সালে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী আসেন শান্তিনিকেতনে। তিনিও এই এলাকায় প্রয়োজনীয়তা বুঝে হাসপাতাল তৈরির টাকা সংগ্রহ করতে শুরু করেন। ওই সময়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। পুরো টাকা দিয়ে যান বিশ্বভারতীকে। শেষ পর্যন্ত ১৯৬২ সালে তৈরি হয় হাসপাতালের ভবনটি। তহবিলের টাকা থেকেই তৈরি হয় হাসপাতাল। গান্ধীর ইচ্ছে মেনেই হাসপাতালের নাম দেওয়া হয় ‘দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ মেমোরিয়াল হাসপাতাল’।

    বিশ্বভারতীর উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ বলেন, “ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই আগামিদিনে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রজ মেমোরিয়াল হাসপাতাল ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হোমিওপ্যাথি ছাড়াও আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে হতে চলেছে উন্নতমানের হাসপাতাল।” বিশ্বভারতীর বিনয় ভবনের অধ্যক্ষ সমীরন মণ্ডল বলেন, “নয়া উপাচার্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নবরূপের অপেক্ষায় ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল।” জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, “ঐতিহ্যবাহী হাসপাতাল ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। উপাচার্যের তৎপরতায় আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়েই হতে চলেছে আয়ুষ হাসপাতাল। রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথি-সহ আয়ুর্বেদ পরিষেবার মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)