অর্ণব দাস, বারাকপুর: তৃণমূল কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ নেতার ‘দাদাগিরি’ বরানগরে। মাছ বিক্রেতাকে দোকানে বসতে বাধা দেওয়া, প্রতিবাদ করায় ঘরে ঢুকে মারধর, লাগাতার হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর সব অভিযোগ উঠেছে অমিত বিশ্বাস নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে। মারধরের জেরে শয্যাশায়ী মাছ বিক্রেতার স্বামী। আতঙ্কে দোকান যাওয়া বন্ধ তাঁর। ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় সমস্যায় ‘দিন আনি দিন খাই’ পরিবার। আক্রান্তদের দাবি, অবিলম্বে পুলিশ ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।
বরানগর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালীমাতা লেনের বাসিন্দা চন্দনা বিশ্বাস। স্বামী, ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। পেশায় মাছ বিক্রেতা। বরানগর বাজারের আগে এক জায়গায় বসে মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। কিন্তু আচমকাই চন্দনাকে মাছের দোকান করতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ অমিত বিশ্বাস নামে এক নেতা বারবার চন্দনাকে দোকানে বসতে বারণ করছেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি চন্দনাদেবী। মাছ বিক্রিই তো তাঁর একমাত্র উপার্জনের রাস্তা। তাই অমিতের কথার প্রতিবাদ করে তিনি সটান জানিয়েছিলেন, ”আমি দোকানে বসবই।” আর শিরদাঁড়া সোজা করে অন্যায় আবদারের প্রতিবাদ করার মাশুল গুনতে হল চন্দনাকে।
অভিযোগ, অমিত বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তি চন্দনার বাড়িতে ঢুকে মারধর করেন। সেসময় তাঁর স্বামী রুখে দাঁড়ান। তাঁকেও পালটা বেদম প্রহার করা হয়। মারের চোটে আহত হয়ে শয্যাশায়ী চন্দনার স্বামী। এই ঘটনায় আতঙ্কে গৃহবন্দি দম্পতি। ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন চন্দনা। তাঁর কথায়, ”অমিত বিশ্বাস নামে তৃণমূল নেতা বারবার আমাকে হুমকি দিচ্ছে। বলছে, মাছের দোকানে যেন আমি না বসি। আমি তাঁকে বলেছি যে দোকানে বসবই। এসব শুনে রেগে পালটা আমাকে বলছে ? ‘জানো আমি কে? কী করতে পারি? আমি পৌরসভার বড় পদে আছি। আমার কথা শুনলে বিপদ আছে।’ তাতেও আমি ওর কথা শুনব না বলে বলেছি। তারপর আমার বাড়ির ভিতর ঢুকে মারধর করে। আমার স্বামী আমাকে বাঁচাতে গেলে তাঁকে এমনভাবে মারে যে বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারছে না! আমরা তো ভয়ে আছি। তবে চাই, এই লোকটার শাস্তি হোক।”
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে খবর। আসলে আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দি ওই দম্পতি। আর এই ঘটনায় আরও একবার প্রমাণ করে দিল, দলের হাজার সতর্কবার্তা, সংযত থাকার নির্দেশ সত্ত্বেও কোনও কোনও জায়গায় তৃণমূল নেতাদের ‘দাদাগিরি’ এখনও চলছে।