• কিডনির অসুখে ব্রেনডেথ, কলকাতার নাবালকের মরণোত্তর চক্ষুদানে দৃষ্টি ফিরে পেল ২ জন
    প্রতিদিন | ২৩ মে ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিডনির সমস্যা ছোট থেকে। হাজারও ঝড়ঝাপটা সামলে কিডনিদাতা পাওয়া যায়। অস্ত্রোপচারও হয়। শেষরক্ষা হল না। শেষমেশ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বছর বারোর কলকাতার নাবালক। তবে তার মরণোত্তর চক্ষুদানে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল ২ জন। ছেলে সশরীরে না থাকলেও, অন্যের মাধ্যমে বাঁচবে ? চোখের জল মুছতে মুছতে সেকথাই বলছেন সদ্য সন্তানহারা বাবা ও মা।

    নিহত নাবালক উমাঙ্গ গালাডা। দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর এলাকার বাসিন্দা। শহরের এক বিখ্যাত বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। প্রায় ছোট থেকেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ওষুধপত্রে আর কাজ হবে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হবে। গত ২৮ মার্চ থেকে তাই কলকাতার এখ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল নাবালক। কিডনিদাতার খোঁজ চলছিল। ইতিমধ্যে তার শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে থাকে।

    তবে একজন কিডনিদাতার খোঁজ পাওয়া যায়। চিকিৎসক জানান, গত ১৫ মে, অস্ত্রোপচার হয়। কিডনি প্রতিস্থাপন সফলই হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। গত মঙ্গলবার ব্রেন ডেথ হয় নাবালকের। উমাঙ্গের বাবা ঊজ্জ্বল জানান, “ওর মা-ই কিডনি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রক্তের গ্রুপ এক না হওয়ায় দিতে পারেননি। কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু পরে হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। মৃত্যু হয় তার।” এরপরই পরিবারের লোকজন মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী রিজিওনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশন (ইস্ট) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। লিভার এবং চোখ দান করা যাবে বলেন জানান বিশেষজ্ঞরা। সেই অনুযায়ী ওই দুই অঙ্গদান করা হয়। উমঙ্গের লিভার পেয়েছে মুম্বইয়ের এক খুদে। চোখে দৃষ্টি ফিরেছে দু’জনের। পুত্রশোকে ভগ্নপ্রায় উমঙ্গের মা হাসপাতালের বেডে শুয়ে বলেন, “আমার ছেলে পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। এআই নিয়ে ও খুবই আগ্রহী। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতায় বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই থাকত। আমরা অবশ্য নানা কাজে ওকে ব্যস্ত রাখতাম। তাই মানসিক অবসাদ কোনওদিন গ্রাস করতে পারেনি। আমি মনে করি যাঁরা ওর অঙ্গে প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন, তাঁরা সেই পজিটিভ এনার্জি পাবেন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)