নিষিদ্ধ চায়না জালের লাগামহীন ব্যবহারে সঙ্কটের মুখে দেশীয় মাছ
বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: নিষিদ্ধ ‘চায়না’ জাল ব্যবহার করে গ্রামেগঞ্জের জলাশয়ে নির্বিচারে চলছে ডিমওয়ালা মাছ শিকার। ফলে প্রজননের আগেই নিষিদ্ধ ওই জালে আটকে সঙ্কটের মুখে দেশীয় মাছ। ওই জাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় মৎস্য দপ্তরের উদাসীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের। যদিও দপ্তরের দাবি, খোঁজখবর নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
কয়েক বছর ধরে অনলাইনে নিষিদ্ধ চায়না জাল কিনে এনে অবাধে চলছে মাছ শিকার। বর্তমানে বিভিন্ন দোকানে সহজেই মেলে এই মাছ ধরার জাল। জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ এই জালের নাম কোথাও হাঙর, কোথাও রাক্ষস আবার কোথাও চায়না। এই জালগুলি সাধারণত লম্বায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট হয়। লোহার রড দিয়ে রিং বানিয়ে তাতে সূক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। ফলে দু’দিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে। এই জালের ভিতরে ছোট কিংবা বড় যেকোনও মাপের মাছ ঢুকলে আর বের হতে পারে না। কই, পুঁটি, শিঙি, ট্যাংরা, শোল, তেলাপিয়া, মাগুর, কুচো চিংড়ি, রুই, কাতলা থেকে শুরু করে সব ধরনের ছোট-বড় মাছ জালে আটকে পড়ে সহজেই। এই জালের দাম আকার ও গুণমান অনুসারে ৭ থেকে থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে। এই জালে অনেক বেশি মাছ একসঙ্গে ধরা যায় বলে কোচবিহার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনেকেই তা দিয়ে দেদারে মাছ শিকার করছেন ইদানিং।
অভিযোগ, এমনিতেই নেট বা মশারির জাল, ব্যাটারির বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ ধরার কারণে ছোট মাছ মারা যায়। এখন এমন জাল ব্যবহারের ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ সঙ্কটের মুখে। বিশেষ করে এখন গ্রামেগঞ্জের জলাশয়ে এই চায়না জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরা চলছে। বর্তমানে মাছের প্রজননের সময় হওয়ায় ওই বিশাল আকারের জালে আটকে পড়ছে ডিমওয়ালা মাছ। গ্রামের খাল-বিল সহ বিভিন্ন জলাশয়ে অবৈধভাবে চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা রোধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি মৎস্য দপ্তর সহ প্রশাসন। ফলে দেদার চলছে মাছ শিকার।
এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা মৎস্য আধিকারিক অভিজিৎকুমার সাহা বলেন, বর্ষার সময় মাছ ডিম দেয়। ওই ডিম ফুটে পোনা হয়। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব কোথায়, ওরকম জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে মানুষকে সচেতন করতে প্রচারও চালানো হবে। নিজস্ব চিত্র।