• বর্ধমান শহরে বেপরোয়া অবৈধ নির্মাণকারীরা, পুরসভার অভিযান বন্ধ হওয়ায় বিতর্ক
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে প্রশংসা কুড়িয়েছিল বর্ধমান পুরসভা। ঢলদিঘির কাছে তারা একটি বহুতল ভাঙার কাজ শুরু করে। আরও একটি বহুতল ভাঙার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই পুরসভার এই অভিযান থমকে গিয়েছে। কোন জাদুমন্ত্র বলে সেই কাজ থমকে গেল, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন? শহরের বাসিন্দারা বলেন, অবৈধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না হওয়ায় তাদের বাড়বাড়ন্ত চলেছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডেই অবৈধ নির্মাণ মাথা তুলছে। এমনকী সরকারি জায়গা দখল করেও নির্মাণ তৈরি করা হচ্ছে। বর্ধমানের কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, শহরের এক নম্বর ওয়ার্ড সহ সব জায়গাতেই অবৈধ নির্মাণ তৈরি হচ্ছে। কেউ কোনও নিয়ম মানছে না। পুরসভা  অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ কিছুদিন আগে শুরু করায় অনেকেই আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু সেটা লোক দেখানো ছিল বলে কেউ প্রথমে বুঝতে পারেননি। অবৈধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না, সেই অঙ্ক এখন শহরের অনেকেই বুঝে গিয়েছেন।

    বর্ধমানের নীলপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, জিটি রোডের পাশেই অবৈধ নির্মাণ রয়েছে। পুরসভা সেটির ছাদের কিছুটা অংশ ভাঙে। কিন্তু বাকি অংশ এখনও রয়ে গিয়েছে। সেটা ভেঙে ফেলা হলে অবৈধ নির্মাণকারীদের কাছে কড়া বার্তা যেত। নিয়ম না মেনে বহুতল তৈরি করার সাহস আগামী দিনে কেউ দেখাত না। পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কয়েকটি বিল্ডিংয়ের প্ল্যান পাশ নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। সেগুলি আগের বোর্ডের আমলে পাশ করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। শহরের বাসিন্দারা বলেন, অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বিরোধী দলগুলির তেমন হেলদোল নেই। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখাচ্ছেন না। সেই কারণেই অবৈধ নির্মাণকারীরা বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছে। পুরসভা বেশ কয়েকটি অবৈধ নির্মাণের কাজ আটকেও ছিল। কিন্তু কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আবার তা চালু হয়ে যায়। কীভাবে কাজ আটকে দেওয়ার পরও তা আবার শুরু হচ্ছে, তা নিয়েও অনেকেই সন্দিহান। শহর লাগোয়া গ্রামীণ এলাকাগুলিতে অবৈধ নির্মাণ বেড়েছে। উল্লাস এলাকায় এক অবৈধ নির্মাণকারীকে জেলা পরিষদ চিঠি দেয়। এর বেশি আর কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ এলেই আমরা পদক্ষেপ  নিই। উল্লাসের ওই নির্মাণকারীকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    শহরের বাসিন্দারা বলেন, পুকুর ভরাট নিয়ে বর্ধমান পুরসভা কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় সুফল পাওয়া গিয়েছে। একইভাবে অবৈধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে আমরা যথেষ্ট সক্রিয়। কোনও অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে শুরু করলে নির্মাণকারী আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সেই কারণে ভাঙার কাজ কিছুদিন পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে কাউকে ছাড়া হবে না।  
  • Link to this news (বর্তমান)