• ভুয়ো নথিতে শস্যবিমার টাকা আত্মসাতের নালিশ
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান:  ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে বিমার টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকেই চাষ করেন না। অন্য এলাকায় জমি দেখিয়ে বিমার টাকা তোলা হয়েছে। বাস্তবে সেই সমস্ত এলাকায় তাঁদের নিজস্ব জমি নেই। এমনই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার রায়না-১ ব্লকের বেশ কিছু চাষি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ঘটনার তদন্তর দাবিতে তাঁরা বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগও করেছেন। ওই এলাকার চাষি অভিজিৎ রায়, কৃষ্ণপদ মণ্ডল বলেন, আমাদের এলাকার কয়েকটি পরিবারকে বিমার টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিবারগুলি কীভাবে টাকা পেয়েছে, তার তদন্ত হওয়া দরকার। অন্যের জমির নথি দেখিয়ে তারা টাকা তুলেছে। অনেক দিন ধরেই তারা এই কাজ করছে। এক পরিবারের চার বিঘা জমি রয়েছে। অথচ তারা মোটা অঙ্কের বিমার টাকা পেয়েছে। যারা অবৈধভাবে বিমার টাকা পেয়েছে তাদের তালিকা ব্লকে দেওয়া হয়েছে। 

    পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, চাষিরা আমার কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। কয়েকটি পরিবার অন্যের জমির নথি জাল করে টাকা তুলেছে। এটা কারও ইন্ধন ছাড়া সম্ভব নয়। কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তার তদন্ত হওয়া দরকার। এডিএ রায়না নীলাদ্রি বসাক বলেন, চাষিরা অভিযোগ করেছেন। এনিয়ে কিছু বলতে পারব না। 

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জেরে এবার বেশকিছু এলাকার আলু চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই মতো জেলার চাষিদের ৭১ কোটি ৭০ লক্ষ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকা দেওয়া হয়েছে। ২৫ হাজার ৮৩৩ জনের অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে। গলসি, জামালপুর, রায়না-১ এবং রায়না-২ ব্লকের চাষিরা বিমার টাকা পেয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডল বলেন, আমাদের সরকার চাষিদের পাশে রয়েছে। গতবারও চাষিরা বিমার টাকা পেয়েছিলেন। এবারও যেসব চাষির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাঁদের টাকা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া সার্টিফিকেট তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে দেখা হবে। কোথাও অসঙ্গতি হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    রায়না-১ ব্লকের চাষিরা বলেন, একাধিকবার সমীক্ষা করার পর টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কীভাবে এরকম অনিয়ম হল, তার তদন্ত করা দরকার। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়াতেই সরকার বিমা চালু করেছে। কাউকে টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই প্রকল্প চালু করেনি। এলাকার বাসিন্দা তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসর সাধারণ সম্পাদক সেখ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, এ ধরনের অনিয়মের সঙ্গে যে বা যারা যুক্ত তাদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। তা না হলে তারা এধরনের অনিয়ম হতেই থাকবে। নির্দিষ্ট কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের কেন টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।
  • Link to this news (বর্তমান)