• ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই খুন বাঁকুড়ায়, জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বুধবার রাতে শালতোড়ায় খুড়তুতো ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের কোপে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকালে সিমলাপালে স্ত্রীকে নর্দমার জলে চুবিয়ে মারল স্বামী। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার দুই প্রান্তে দু’টি খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়ায়। উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে ছাতনায় স্ত্রীর কাটারির কোপে প্রাণ হারিয়েছিলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্বামী। জেলায় পরপর খুন হয়েই চলেছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, ছাতনা ও সিমলাপালের ঘটনায় আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছি। ছাতনার ঘটনায় ধৃত মায়া মালকে এদিন বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আজ, শুক্রবার সিমলাপালে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে ধৃত সাধন গরাইকে খাতড়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে। শালতোড়ায় ভাইকে খুনের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে গিয়েছে। তার খোঁজ চলছে। 

    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শালতোড়া থানার নিয়ামতপুরের বাসিন্দা স্বপন বাউরির বাড়ি সংলগ্ন বাগানে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ একটি গোরু ঢুকে পড়ে। বাগানের শাকসব্জি গোরুতে খেয়ে, মাড়িয়ে নষ্ট করে দেয়। তা নিয়ে খুড়তুতো ভাই কমল বাউরির (৪৬) সঙ্গে স্বপনের ঝগড়া হয়। অভিযোগ, বিবাদ চরমে উঠলে স্বপন টাঙি নিয়ে কমলের উপর চড়াও হয়। সে কমলের পায়ে টাঙির এলোপাথারি কোপ মারতে থাকে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কমল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে শালতোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা পুলিসকে জানিয়েছেন। 

    অন্যদিকে, সিমলাপালের মাচাতোড়া অঞ্চলের বাঁশি গ্রামের বাসিন্দা সাধনের সঙ্গে সাবিত্রী গরাইয়ের (৫৫) বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ চলছিল। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সাবিত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে তাঁর স্বামী সন্দেহ করত। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গরাই বাড়ি থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ প্রতিবেশীরা প্রতিদিনই শুনতে পেতেন। অভিযোগ, এদিন সকালে ঝগড়া চরমে পৌঁছলে সাধন স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বাড়ির শৌচালয়ের সামনে একটি নর্দমার মধ্যে ফেলে। নর্দমার জলে সে সাবিত্রীর মুখ চেপে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সে স্ত্রীকে জল থেকে তোলে। পরে সিমলাপাল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পুলিস ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সাধন সন্দেহ করত। তা নিয়ে ঝগড়া বাধলে একদিন তাঁকে খুন করবে বলে সাধন স্ত্রীকে প্রায়ই হুমকি দিত। সাবিত্রীর ভাই কৃষ্ণপদ মণ্ডল জামাইবাবুর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে আমরা একটি মামলা রুজু করেছি। আজ, ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।   সাজাপ্রাপ্ত আনন্দ বাউরিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)