• সারাবছর বাঁধ দেখাশোনা করে না সেচদপ্তর, অভিযোগ জেলা পরিষদ সদস্যের
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: নদীবাঁধ দেখাশোনা নিয়ে সেচদপ্তরের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন জেলা পরিষদের সদস্য তথা দাসপুর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সৌমিত্র সিংহরায়। বৃহস্পতিবার ঘাটাল মহকুমার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে আগাম প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘নদীবাঁধ দেখভালের বিষয়ে সেচদপ্তর বছরে ১০মাস কোনও কাজ করে না। ফলে বর্ষার সময় ঘাটাল মহকুমাবাসীকে সমস্যায় পড়তে হয়।’

    বৃহস্পতিবার ঘাটাল শহরের টাউন হলে ওই মিটিং হয়। সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস, মহকুমার পাঁচটি ব্লকের বিডিও, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহকারী সভাপতি, সেচদপ্তরের জেলা ও মহকুমা ইঞ্জিনিয়ার, ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভার চেয়ার‍ম্যান, জেলা পরিষদের সদস্য সহ মহকুমার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনেই সৌমিত্রবাবু বলেন, সেচদপ্তর সারাবছর ধরে যদি নদীবাঁধ ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ করত, যে সমস্ত জায়গায় বাঁধ দুর্বল হয়েছে-সেদিকে নজর দিত; তাহলে বন্যার সময় মহকুমার মানুষকে দিনের পর দিন চরম সমস্যায় দিন কাটাতে হতো না। মহকুমার বিভিন্ন নদীতে যখন জলস্ফীতি হয়, তখন সেচদপ্তরের না থাকে পর্যাপ্ত কর্মী, না বাঁধ সংরক্ষণের পরিকাঠামো থাকে। তখন সাধারণ মানুষকে দিয়েই বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।

    গতবছর দাসপুর-২ ব্লকের কৈজুড়ির ঘটনার উদাহরণও দেন সৌমিত্রবাবু। তিনি বলেন, ওইসময় সাধারণ মানুষ যদি কৈজুড়িতে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে হাত না লাগাতেন, তাহলে বাঁধটি রক্ষা করা যেত না।

    যদিও সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা সৌমিত্রবাবুর অভিযোগ মানতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, সেচদপ্তর সারা বছরই বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। নদীর বাঁধ উপচে যখন জল ঢুকে পড়ে, তখন সাধারণ মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই বাঁধ সংরক্ষণে হাত লাগান।

    বৈঠকে সেচদপ্তরের ‘মাটি ব্যাঙ্ক’ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের কয়েকজন বলেন, সেচদপ্তর মাত্র কয়েক জায়গায় মাটি ব্যাঙ্ক করে রেখেছে। নদীতে জলস্ফীতির সময় সাত-আট কিমির দূরে মাটি ব্যাঙ্ক থেকে মাটি এনে বাঁধ মেরামত করতে সমস্যা হয়। তাই সেচদপ্তরকে দু’এক কিমি অন্তর মাটি ব্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত মাটি ব্যাঙ্ক করার জায়গা দেবে।

    জেলাশাসক সমস্ত দপ্তরকেই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার  নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মহকুমার বিভিন্ন নদীবাঁধে কোথায় কী দুর্বলতা রয়েছে, তা সেচদপ্তর চিহ্নিত করেছে। সেগুলি মেরামত করার ব্যবস্থা হচ্ছে। দু’সপ্তাহের মধ্যে ফের সেচদপ্তরের রিপোর্ট নেওয়া হবে। বিভিন্ন স্লুইসগেট ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা-তাও দেখতে বলা হয়েছে। সমস্ত দপ্তরকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)