• বাংলাদেশে কি অস্ত্র পাচারের ছক? পরপর কয়েকটি অভিযান থেকে ধারণা পুলিসের
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ডোমকল: বারংবার অস্ত্র নিয়ে জলঙ্গির পথে কারবারিরা। নেপথ্যে কি ওপার বাংলায় অস্ত্র পাচারের ছক? মুঙ্গেরে তৈরি হওয়া পিস্তল কি হাত বদলে পাচার হচ্ছে ওপার বাংলায়? গত কয়েক মাসে জলঙ্গি কিংবা জলঙ্গির পথে আসার সময় অস্ত্র সহ একাধিক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তারির পর এখন সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে পুলিসকে।

    প্রসঙ্গত, গত ২ মে জলঙ্গির সাহেবরামপুরে অভিযান চালায় জেলা পুলিসের এসওজি এবং জলঙ্গি থানা পুলিসের যৌথ টিম। ঘটনায় ৪টি পিস্তল, ৮টি ম্যাগাজিন, ৩০ রাউন্ড কার্তুজ সহ মালদহের দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ওই টিম। তারা জলঙ্গির এক দুষ্কৃতীর কাছে ওই আগ্নেয়াস্ত্রের ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিল। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ধৃতরা জানিয়েছিল, তারা ক্যারিয়ার হিসেবে ওই অস্ত্রের ডেলিভারি দিতে এসেছিল। তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় ওই অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার বরাত দেওয়া ছিল। এরপরে সেই অস্ত্র হাত বদলে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে। তবে শুধু ওই ঘটনাই নয়, বুধবার সকালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নওদায় পানুর এলাকার রেলগেট সংলগ্ন এলাকা থেকে এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছিল। তার কাছে থেকে ৭টি সেভেন এমএম পিস্তল, ১৩টি ম্যাগাজিন, ১০ রাউন্ড কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিস। ধৃত ওই অস্ত্র কারবারি হাবলু শেখ প্রাথমিক জেরায় পুলিসকে জানিয়েছিল, মুঙ্গের থেকে ওই অস্ত্র কিনেছিল। তা জলঙ্গির সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। এক একটি পিস্তল ৩৫-৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করত বলেও পুলিসি জেরার মুখে জানিয়েছিল হাবলু। শুধু এইরকম দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় নয়, গত কয়েক মাসে একাধিকবার জলঙ্গিতে অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার হয়েছিল একাধিক দুষ্কৃতী। পাশাপাশি জলঙ্গিতে অস্ত্র আনার সময় পুলিসের হাতে পাকড়াও হয়েছিল একাধিক অস্ত্র কারবারি। মাসকয়েকের ব্যবধানে একাধিকবার জলঙ্গির রুটে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারির পর তা থেকে তদন্তকারী আধিকারিকদের একাংশের অনুমান, এদিকের দুষ্কৃতীদের চাহিদা মিটিয়ে এখন অস্ত্র পাচার হচ্ছে বাংলাদেশেও। একদিকে বাংলাদেশে অশান্ত পরিস্থিতি অন্যদিকে অন্যান্য গাদা বন্ধুকের তুলনায় আকারে ছোট হওয়ায় খুব সহজেই পিস্তল পাচারের চেষ্টা করছে দুষ্কৃতীরা। 

    নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, মে মাসের শুরুতে অস্ত্র সহ যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তারা জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জানিয়েছিল, ওই অস্ত্র বাংলাদেশে পাচারের কথা ছিল। তবে শুধু ওই ঘটনাই নয়, সীমান্ত এলাকায় এভাবে অস্ত্র উদ্ধারের পর আমাদের অনুমান, বাংলাদেশেও অস্ত্র পাচার হয়ে থাকতে পারে।

    যদিও জেলা পুলিসের কর্তারা অবশ্য সরাসরি বাংলাদেশে পাচারের বিষয়টি মানতে নারাজ। মুর্শিদাবাদ পুলিস জেলার এসপি কুমার সানি রাজ বলেন, ডোমকলে অস্ত্রের রমরমা নিয়ে একটা পুরনো পরিচিতি তো  রয়েছে। তবে এবার আমরা জেলাজুড়ে অস্ত্রের রমরমা আটকাতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। তাতেই বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে অস্ত্র পাচারের কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)