এই সময়, আসানসোল: তর্জন–গর্জনই সার। সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিয়ে আসানসোলের হটন রোডে দোকান উচ্ছেদ স্থগিত করলেন পুর কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীরা কয়েকদিন সময় চেয়ে আবেদন করায় আপাতত তাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে না বলে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
বাস্তবে তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশ।
তাঁদের দাবি ছিল, পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা চলবে না। তাতেই পিছু হটেন পুর কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার অভিযানে তৃণমূল নেতৃত্বই বাধা দেওয়ায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের একবার প্রকাশ্যে এল বলে কটাক্ষও করেছে বিজেপি।
আসানসোল বাজার, হটন রোড ও আশপাশের অঞ্চলের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য হটন রোডে একটি বড় নালা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এর জন্য রাস্তা দখল করে থাকা ব্যবসায়ীদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ।
মেয়র বিধান উপাধ্যায় নিজে পথে নেমে হাতজোড় করে ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বলেছিলেন। বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়ে বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন। অনেকে সরেও গিয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজু আলুওয়ালিয়া।
তিনি বলেন, ‘পুনর্বাসন না পেলে কেউ উঠবেন না। রাজ্য সরকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড দালালদের কথা শুনে সরকার–বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়েছে। আসানসোলের একাধিক জায়গায় রেলের জমি দখল করে নির্মাণ তুলেছে পুরসভা। সে সব আগে ভাঙা হোক।’
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে দফায় দফায় তেঁতে ওঠে হটন রোড এলাকা। তার মধ্যেই বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে দোকান খুলে নিতে দেখা যায়। তাঁদেরই একজন মহম্মদ জামশেদ বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর ধরে ফটো বাইন্ডিংয়ের দোকান চালাচ্ছি। পুরসভার অনুরোধে উঠে গিয়েছি। কিন্তু পুনর্বাসন দিতে হবে।’
মোবাইল দোকানের মালিক জাভেদ আখতার বলেন, ‘হঠাৎ বুলডোজ়ার চালিয়ে দিয়ে সম্পত্তির ক্ষতি হবে। তাই উঠে গিয়েছি। কিন্তু পুনর্বাসন না দিলে ফের এখানে বসব।’
এ দিন উচ্ছেদ অভিযান স্থগিতের বিষয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘কয়েকজন সময় চেয়েছেন। মানবিক কারণে অভিযান বন্ধ রাখলাম।’ উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতার বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘যা ইচ্ছে করুন। সাধারণ মানুষের স্বার্থে পুরবোর্ড কাজ করছে। সামান্য বৃষ্টিতেই হটন রোড ও পার্শ্ববর্তী এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। নিকাশির উন্নতির জন্যই বড় নালা নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই কাজ থেমে থাকবে না।’