তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল তৃণমূল কাউন্সিলার রাকেশ পাড়ুই (৩২)-এর দেহ। ওই রাত থেকেই তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে হরিণঘাটায় জল্পনা চলছে। এরই মধ্যে শোনা গেল, রাকেশ অনেকদিন ধরেই কোটি টাকার ঋণের বোঝায় জর্জরিত। অনেকেই তাঁর কাছ থেকে টাকা পান। তবে পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরেই রাকেশ এই চরম সিদ্ধান্ত নেন কি না তা এখনও জানা যায়নি। রাকেশের মৃত্যুর পর সাংসারিক অশান্তির পাশাপাশি ধারদেনার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে হরিণঘাটা থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, হরিণঘাটা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার হওয়ার পরে পরিবহণ ব্যবসায় নেমেছিলেন রাকেশ। জেলা তথা সন্নিহিত উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে গাড়ি নিয়ে ভাড়া খাটাতেন রাকেশ। আর সেই গাড়ির ব্যবসাতে নেমেই প্রচুর টাকা ধার করে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত অনেকেই তাঁর কাছ থেকে টাকা পান। সেক্ষেত্রে পাওনাদারদের চাপ সহ্য না করতে পেরে রাকেশ আত্মহত্যা করেছেন কি না সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এ দিকে রাকেশের মৃত্যুর পর অনেকেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর হরিণঘাটা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রাজীব দালাল বলেন, ‘কেন রাকেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সেটা এখনও বুঝতে পারছি না।’ তৃণমূল কাউন্সিলারের মৃত্যু প্রসঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক তৃণমূল জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। তবে কেন রাকেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তা অস্পষ্ট।’ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাকেশ পাড়ুইয়ের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাকেশের বাড়ির অদূরেই বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিদিনের মতো দলীয় কর্মীরা কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই তাঁরা রাকেশ পাড়ুইয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। এর পর স্থানীয় হরিণঘাটা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে তৃণমূল কাউন্সিলার রাকেশের আত্মহত্যার পিছনে ঠিক কোন কারণ লুকিয়ে রয়েছে তা এখনও অস্পষ্ট।