বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি হারা শিক্ষকদের আন্দোলন ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আন্দোলনের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রাজ্য সরকার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট জানায়— ঠিক কী কারণে এই বিক্ষোভে আপত্তি রাজ্য সরকারকে তা লিখিত ভাবে আদালতকে জানাতে হবে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, রাজ্যের বক্তব্য খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে শুক্রবার। ওই দিন আদালত চূড়ান্ত রায় দেবে বলেও জানানো হয়েছে।
আন্দোলনের দিন ধস্তাধস্তিতে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাও এদিন আদালতে উঠে আসে। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই কর্মসূচি মূলত শিক্ষকদের হলেও, যাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তিনি গ্রুপ ডি কর্মী। তাঁর উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় রাজ্যের তরফে। রাজ্যের দাবি, ওই বিক্ষোভে ২২ জন পুলিশ আহত হন এবং ১৯ জন সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়াও, বিক্ষোভের ফলে আশপাশের একাধিক দপ্তরের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়েছে বলে জানায় সরকার।
আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের মারধর করেছে শাসক দলের কিছু সমর্থক, অথচ পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাঁদের আরও দাবি, শিক্ষক নেতা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল ও সুদীপ কোনারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের কোনও বৈধ কারণ ছাড়াই বারবার থানায় ডেকে পাঠানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এদিন হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিশ।
প্রসঙ্গত, চাকরি হারানো এই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগে অংশ নিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁদের চাকরি চলে যায়। সেই ক্ষোভ থেকেই বিকাশ ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবস্থান। গত বৃহস্পতিবার আন্দোলন চলাকালীন উত্তেজনা চরমে ওঠে, পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা।
এই ঘটনায় এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, সাত ঘণ্টা ধরে আন্দোলন চললেও পুলিশ সংযত ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে কিছু পদক্ষেপ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে বিকাশ ভবনের সামনে এই আন্দোলন এবং তা ঘিরে উত্তেজনা নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। এখন দেখার, শুক্রবার হাই কোর্ট কী সিদ্ধান্ত দেয়।