কথা দিয়ে কথা রাখলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধান। তার মধ্যেই মেদিনীপুরের কৃতী ছাত্রী লাবণী মাহাতোর পড়াশোনার জন্য আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়ালেন এসপি। সিভিক ভলান্টিয়ারের মেয়ে লাবণীর স্বপ্ন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার। কিন্তু মেয়ের স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ সংকট। পাশে এসে দাঁড়ালেন পুলিশ সুপার। ‘এই সময় অনলাইন’-এর থেকেই প্রথম তিনি লাবণীর কথা জানতে পেরেছিলেন।
কে এই লাবণী?
মাধ্যমিকে ৬৪৭ নম্বর পেয়ে মেদিনীপুরবাসীকে গর্বিত করেছে পিড়াকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী লাবণী। শালবনি ব্লকের পিড়াকাটা সংলগ্ন বহড়াবনি এলাকার বাসিন্দা জানিয়েছিল ভবিষ্যতে বিজ্ঞান শাখায় পড়ে সে ডাক্তার হতে চায়। লাবণীর বাবা কিনু মাহাতো সিভিক ভলান্টিয়ার। তিনি তখন ‘এই সময় অনলাইন’-কে বলেছিলেন, ‘মেয়ে ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু, ওকে পড়ানোর বা নিটের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এত টাকা কোথায় পাব? আমি যেটুকু বেতন পাই আমাদের চার জনের (স্ত্রী ও দুই মেয়ে) সংসার চালাতেই সব শেষ হয়ে যায়।’
লাবণীর পাশে দাঁড়ালেন পুলিশ সুপার
সেই ঘটনার দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই নিজের দেওয়া কথা রাখলেন ধৃতিমান সরকার। বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে লাবণীর হাতে তুলে দেওয়া হলো এককালীন আর্থিক সহায়তা। পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা পুলিশের আধিকারিকরা পিড়াকাটা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লাবণী ও তার বাবা কিনু মাহাতো-র হাতে সেই অর্থ তুলে দেন। সেই সঙ্গে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লাবণীকে সংবর্ধিতও করা হয়।
কী বললেন লাবণীর বাবা?
লাবণীর বাবা বলেন, ‘আমি গর্বিত, আপ্লুত। আমার চোখে জল এসে যাচ্ছে। আমি পুলিশ আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম, মাসে মাসেও যদি কিছু আর্থিক সাহায্য করা যায়, তাহলে মেয়েটা খুব ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। এর পরই ওঁরা আমাকে ফোনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। স্যর সেই আশ্বাসও দিয়েছেন।’
লাবণীর পাশে দাঁড়িয়ে কী জানালেন এসপি?
তিনি বলেন, ‘লাবণীর পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত। আপনাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। কারণ আপনাদের মাধ্যমেই এই খবর প্রথম পেয়েছিলাম।’
কী বলছেন পিড়াকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক?
পিড়াকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতনু মণ্ডল এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি পিন্টু ওঝা বলেন, ‘এক সময়ের মাওবাদী অধ্যুষিত এই এলাকার ছেলেমেয়েরাই আজ আমাদের গর্ব। ওদের আরও সাফল্য কামনা করি। লাবণীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ।’