• আসানসোল ও দুর্গাপুরে লাগামছাড়া ড্রোনের ব্যবহার, উদ্বেগ
    বর্তমান | ২৪ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: জম্মু, কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে ড্রোন হামলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। দেশজুড়ে শুরু হয় সতর্কতা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দুর্গাপুরে ১০০টি ‘ভাইটাল ইনস্টলেশন’ চিহ্নিত হয়। যেগুলির উপর বাড়তি নজরদারি শুরু হয়। স্টিল ও তাপবিদ্যুতের মতো গুরুত্বপূর্ণ কারখানা থেকে সেনা ছাউনি, বড় ব্রিজ থেকে জলাধার সবই আছে জেলায়। যা শত্রুপক্ষের ‘সফট টার্গেট’ হতেই পারে। এহেন জেলাতেও যথেষ্ট পরিমাণে ড্রোনের ব্যবহার হচ্ছে। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান থেকে কোনও আবাসনের প্রমোশন। কখনও আবার কোনও ইউটিউবার ‘পাখির চোখে’ শহর দেখিয়ে নিজের ভিউয়ার বাড়াচ্ছেন। পাকিস্তানের ঘটনার পর থেকে শিক্ষা নিয়েও এনিয়ে কোনও হেলদোল নেই জেলায়।দুর্গাপুরের এসিপি সুবীর রায় বলেন, মনে রাখতে হবে, ড্রোন ওড়ানোর আগে পুলিসের অনুমতি প্রয়োজন। পুলিসের অনুমতি না নিয়ে ড্রোন উড়িয়ে ধরা পড়লে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    ড্রোন ভিউ এখন বহু মানুষের স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে উঠেছে। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান হোক কিংবা জন্মদিনের পার্টি, ড্রোন উড়িয়ে আয়োজনের বিশালতা না দেখালে আয়োজকের ঠিক তৃপ্তি আসে না। স্বাভাবিকভাবেই কারণে অকারণে ডানা মেলছে ড্রোন। বহু উঁচু থেকে নেওয়া সেই ছবি ওই আয়োজনের পাশাপাশি এনে দিচ্ছে পাশ্ববর্তী এলাকার নানা দৃশ্যও। বিভিন্ন প্রজেক্টের বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোনের তোলা ছবি, ভিডিও। এছাড়াও রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হওয়ার তাড়া। নিজের ভিউয়ার বাড়াতে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ছবি আকাশ থেকে তুলছেন। বিগত কয়েক বছর ধরে ড্রোন ব্যবহারের চল হয়েছে। কিন্তু, তা যে কী ভয়ঙ্কর হতে পারে, ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার কীর্তিতে সেটি এখন সামনে এসেছে। ছবি বা ভিডিও তোলা যে শুধু আর ভিউয়ার বাড়িয়ে রোজগার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা স্পষ্ট। সেইসব ছবি পাকিস্তানের মতো শত্রু শিবির মোটা টাকার বিনিময়ে কিনে নিচ্ছে। এছাড়া, ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধ হোক বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ড্রোন যে কতটা ঘাতক তা প্রমাণিত। এমনকী, ভারত পাকিস্তানে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতেও ড্রোন ব্যবহার করেছিল। পাকিস্তানও ড্রোন দিয়েই ভারতে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছিল। এই ঘাতক দিকটি দেখা সত্ত্বেও শিল্পাঞ্চলের মাটিতে ড্রোনের ব্যবহারে লাগাম টানা হচ্ছে না। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ড্রোন উড়ছে। ছবি উঠছে। এই ছবিগুলি যে কোনও নাশকতার কাজে ব্যবহার হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসী। পাশাপাশি অনেকের দাবি, বাড়ির জানালা, ব্যালকনির কাছেও উঁকি দিচ্ছে ড্রোন। নষ্ট হচ্ছে ‘প্রাইভেসি’। দেশের নিয়ম অনুযায়ী, ড্রোন ওড়ানোর আগে স্থানীয় পুলিসের কাছে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। কী কারণে সেটি ওড়ানো হচ্ছে, চরিত্র যাচাই করেই ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেইসব মানা হচ্ছে না। ডিসি(সেন্ট্রাল) ধ্রব দাস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)