• পড়ুয়াদের নেশার আড্ডায় টেনে টাকা আদায়, আটক দোকানদার
    বর্তমান | ২৪ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: ছাত্রছাত্রীদের প্রলোভন দেখিয়ে নেশার জগতে ঢোকানোর গুরুতর অভিযোগ উঠল দাসপুর থানার খানজাপুরের  এক দোকানদারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই দোকানের আন্ডারগ্রাউন্ডে চালানো হতো নেশার আসর। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের প্রলোভন দেখিয়ে টেনে আনা হতো। পরিবর্তে তাদের থেকে মোটা টাকা নিত ওই দোকানদার। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানাজানি হতে বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয়রা দোকানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। দোকান ভাঙচুর করতে উদ্যত হয় ক্ষিপ্ত জনতা। পুলিস খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিস জানিয়েছে, ওই রাতেই দোকানের মালিককে আটক করা হয়। স্থানীয়রা দোকানদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।খানজাপুর ইউনিয়ন হাইস্কুল থেকে কিছুটা দূরে ঘাটাল-রানিচক রাস্তার পাশেই স্টেশনারি ও খাবারের দোকানটি। দোকানের নীচেই বিশালাকার ঘর। সেখানেই গোপনীয়তা রক্ষা করে পড়ুয়াদের বিভিন্ন রকম নেশার জিনিসপত্র বিক্রি করা হতো বলে অভিযোগ। কমবয়সি পড়ুয়ারা স্কুলে বা টিউশনে না গিয়ে সেখানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে নেশা করত বলে পুলিস জানতে পেরেছে।

    ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপকুমার মান্না, গুরুপদ হাজরা প্রমুখরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে খানজাপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র টিউশন পড়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর আর বাড়ি ঢোকেনি। যেহেতু ওই দোকানের সামনেই ছাত্রটিকে মাঝেমাঝে দেখা যেত তাই তার বাবা দোকানে খোঁজ করতে যান। তখনও ছাত্রটি দোকানের আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকলেও দোকানদার ছাত্রের বাবাকে কিছু জানাননি। ছাত্রটির ওই দোকানে নেশার টাকা বাকি থাকার জন্য বাড়ি থেকে সোনার গয়না আনার জন্য তাকে আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বের করে বাড়ি পাঠালে তখনই বিষয়টি জানাজানি হয়।

    পরে ওই ছাত্রের কাছ থেকেই জানা যায়, ওই দোকানের আন্ডারগ্রাউন্ডে বহু ছাত্রছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের নানা রকম নেশার জিনিস দিয়ে বিশাল অঙ্কের টাকা দাবি করা হতো। কেউ বাবার পকেট থেকে টাকা, কেউ বা মায়ের গয়না চুরি করে ওই টাকা পরিশোধ করত। অনেক ক্ষেত্রে দোকানদার শিক্ষক সেজে পড়ুয়াদের বাড়িতে ফোন করে বলে দিত, বই কেনার টাকা লাগবে, সেই টাকা যেন ছাত্র বা ছাত্রীকে দিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার ওই ছাত্র বয়েকা টাকা দিতে না পারায় তাকে আটকে রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। রাতেই বেশ কয়েক শ’ অভিভাবক জমায়েত হয়ে ওই দোকানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিসের জেরায় দোকানদার স্বীকার করেছে, বিড়ি, সিগারেট, গাঁজা সহ বিভিন্ন ধরনের মদ গোপনে বিক্রি করত। তবে ছাত্রছাত্রীরা নিজে থেকে না চাইলে দোকানদার কাউকে জোর করে বিক্রি করত না।  ঘটনার পর এলাকার অভিভাবক মহলে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই দোকানের আন্ডার গ্রাউন্ডে টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রী এবং যুবক-যুবতীদের অবাধে মেলামেশারও সুযোগ করে দেওয়া হতো।  দোকানে স্থানীয়দের বিক্ষোভ।- নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)