• বহুতলে ব্যবসা: অগ্নিকাণ্ড রুখতে কোন কোন নিয়ম বাধ্যতামূলক, ঠিক করতে কমিটি নবান্নের
    বর্তমান | ২৪ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রুফটপ কাফে থেকে শুরু করে যে কোনও ধরনের ব্যবসা করতে গেলে কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা ঠিক করতে কমিটি তৈরি করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। মূলত, কোনও বিল্ডিংয়ে ব্যবসা করতে গেলে অগ্নিকাণ্ড রুখতে কোন নিয়মগুলি মেনে চলা বাধ্যতামূলক, দমকল সংক্রান্ত কী কী নিয়ম রয়েছে, তা ঠিক করবে এই কমিটি। রাজ্য এবং জেলা স্তরে দু’টি কমিটি তৈরি হয়েছে। রাজ্যস্তরের কমিটির শীর্ষে রয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জেলাস্তরে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে। 

    সম্প্রতি বড়বাজারে একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। তদন্তে জানা যায়, ওই হোটেলে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। ছিল না দমকলের ছাড়পত্রও। সম্প্রতি পাথুরিয়াঘাটায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, ছাদে যাওয়ার দরজা বন্ধ থাকায় সিঁড়িতেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। এই পরিস্থিতিতে রুফটপ কাফে বন্ধ করার ফরমান জারি করে কলকাতা পুরসভা। বলা হয়, ছাদ হল ‘ওপেন স্পেস’। তা আটকে রাখা বা অবরুদ্ধ করা যাবে না। ছাদ ঘিরে কোনও নির্মাণ করা যাবে না। ব্যবসার জন্য ছাদ বিক্রিও করা যাবে না। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনে থাকা এই নিয়মগুলি কার্যকর করতে ময়দানে নেমেও পড়ে পুর কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় একাধিক রুফটপ রেস্তরাঁর মালিকপক্ষ আদালতে মামলা করে। আদালত তখন কলকাতা পুরসভাকে শুনানির মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেয়। এই আবহে সরকার কোনও বিল্ডিংয়ের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার হাল সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছে। তার জন্য বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয় প্রয়োজন। সেই মতো বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করতে কমিটি গড়েছেন মুখ্যসচিব। রাজ্যস্তরে সেই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। পাশাপাশি আবাসন, দমকল, পঞ্চায়েত এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রীকে রাখা হয়েছে। রয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের প্রধান সচিব, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা), কলকাতার পুলিস কমিশনার ও পুর কমিশনার প্রমুখ। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মুখ্যসচিব কমিটি করেছেন। আগামী ২৮ মে কমিটির প্রথম বৈঠক। কমিটি আলোচনার মাধ্যমে একটা প্রস্তাবিত এসওপি তৈরি করবে। তা মুখ্যসচিবের কাছে পেশ করা হবে।’ 

    ওই চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনও  বিল্ডিং বা ব্যবসায়িক বহুতলে ফায়ার লাইসেন্স থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স, বিল্ডিং বিভাগের অনুমোদন রয়েছে কি না, অনুমোদন থাকলেও সেখানে কোনও অবৈধ নির্মাণ হয়েছে কি না, পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা আছে কি না, জিনিসপত্র মজুত কোথায় করা হচ্ছে, দাহ্য পদার্থ কীভাবে রাখা যাবে ইত্যাদি বিষয়গুলি মাথায় রাখতে বলা হয়েছে  কমিটিকে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)