• তিন বছর আগে অনুমতি, এ বারেও ভর্তি নেওয়া হলো না উচ্চ মাধ্যমিকে
    এই সময় | ২৪ মে ২০২৫
  • এই সময়, আসানসোল: দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে তিন বছর আগে উচ্চ মাধ্যমিক পাঠক্রম চালু করার অনুমতি পেয়েছিল সালানপুর থানার কল্যাণেশ্বরী হাইস্কুল। কিন্তু প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকার কথা বলে চলতি বছরেও ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেননি কোনও ছাত্র বা ছাত্রীকে।

    তাঁর এই সিদ্ধান্তে সংলগ্ন গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা থেকে শুরু করে তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতৃত্ব সবাই রীতিমতো ক্ষুব্ধ। যাঁরা এই স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার জন্য রাজ্য শিক্ষা দপ্তর এবং জেলা শিক্ষা দপ্তরের কাছে বারবার আবেদন করেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেই সামাজিক সংগঠন ভাবনা–র প্রতিনিধিরাও।

    সালানপুরের কালীতলার কাছে কল্যাণেশ্বরী হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮০০ এবং স্কুলটিতে শিক্ষক–শিক্ষিকা রয়েছেন ১৬ জন। এই অঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির যারা উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে চায়, তাদের হয় কুলটির নিয়ামতপুরে, না হলে আছড়া অথবা মাইথনে যেতে হয়।

    প্রতিটি স্কুলই ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। এই রাস্তার উপর দিয়ে অনর্গল বিভিন্ন কারখানা এবং কয়লা খনির ডাম্পার ও ট্রাক যাতায়াত করে। ফলে ওই স্কুলগুলির পড়ুয়াদের খুবই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

    জেমারী, সালানপুর ও পার্শ্ববর্তী শোবনপুর, নিমতলা এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, কালীতলার স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ানো শুরু হলে এখানকার ছেলেমেয়েদের কষ্ট করে নয়–দশ কিলোমিটার দূরে যেতে হতো না।

    কল্যাণেশ্বরী হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে এবার যারা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হয়েছে, সেই রমণী মারান্ডি, রাজদীপ ভান্ডারী এবং জিত মণ্ডলও বলল, তাদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক চালু হলে অবশ্যই তারা সবাই উপকৃত হতো।

    একাধিক অভিভাবক এও বললেন যে, স্কুল অনেক দূরে এবং রাস্তাঘাটের অবস্থা বিপজ্জনক হওয়ায় তাঁরা ছেলেমেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তিই করেননি।

    তৃণমূলের শিক্ষা সেলে উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অর্ধেন্দু রায় বলেছেন, যদি শিক্ষকের ঘাটতি থাকে, সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় শিক্ষকতা করতে চান এমন অনেকেই আছেন। তাঁরা এগিয়ে আসবেন।

    ওই বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ লক্ষণ রানা বলেন, ‘তিন বছর আগে যখন এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, তখন ভর্তির সময় চলে গিয়েছিল। গত বছর থেকে আমাদের ইতিহাসের শিক্ষক নেই এবং আরও একাধিক বিষয়ে শিক্ষক দরকার।

    গত বছর ডিআই অফিস থেকে আমাকে বলা হয়েছিল, শিক্ষক রেজিস্ট্রেশন না হলে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা যাবে না। এবারেও আমাদের সেই শিক্ষক ঘাটতি থেকে গিয়েছে।’

    তবে তিনি স্বীকার করেন, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা অতিরিক্ত জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে স্কুলে যথেষ্ট শিক্ষক না–থাকার সমস্যা বা উচ্চ মাধ্যমিকে পঠনপাঠন চালু করতে না পারার কথা জানানো হয়নি।

    জেলার বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় পালকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘আজই বিষয়টি জানলাম। অবশ্যই আমি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।’

  • Link to this news (এই সময়)