এই সময়, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে থাকা ফুটপাথের দোকান কিংবা রেস্তোরাঁয় সাধারণ মানুষ কেমন খাবার খান, সেটা ফের হাতেনাতে প্রমাণ পেলেন ফুড সেফটি আধিকারিকেরা।
শুক্রবার অনিয়মের অভিযোগে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ, হোটেল মালিকদের নোটিস ধরানো হয়। ফুটপাথের দোকানদারদেরও নিয়মবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় বেশ কিছু খাবার সামগ্রী। ফায়ার লাইসেন্স না-থাকায় কয়েকটি রেস্তোরাঁকেও নোটিস দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে ধরা পড়েছে, হোটেলের খাবারে ফুড কালার মেশানো হচ্ছে। কিন্তু সেগুলি মেয়াদ উত্তীর্ণ কি না বোঝার উপায় নেই। পানের দোকানে নানা ধরনের পানমশলা প্যাকেট করে রাখা আছে। সেগুলিও মেয়াদ কবে শেষ হবে বোঝার উপায় নেই।
হোটেলের ফুড লাইসেন্স নেই। রেস্তোরাঁর ফায়ার লাইসেন্স নেই। ফুটপাথের দোকানের হকার লাইসেন্স নেই। টেবিলে টমাটো সস রাখা আছে। কিন্তু কবে সেটির মেয়াদ শেষ হবে সেটা বোঝার উপায় নেই।
অথচ বছরের পর বছর ধরে দিব্যি এই সমস্ত দোকান চলছে। পুলিশ কমিশনারেটের এনফোর্সমেন্ট দপ্তরের এসিপি ফারুক মহম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘কিছু খাবার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই হোটেল এবং রেস্তোরাঁ চালানোয় আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে। সবাইকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিয়মবিধি মেনে না-চললে, এর পরে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে ক্ষুব্ধ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব সম্প্রতি ফুড সেফটি, ভিজিল্যান্স, দমকল, পুলিশ, স্যানিটারি ইনস্পেক্টরদের নিয়ে একটি নজরদারি কমিটি তৈরি করে দেন।
গত সপ্তাহে এই কমিটির সদস্যরা শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্ক লাগোয়া দোকানগুলিতে অভিযান চালান। সেখানে রেস্তোরাঁর শৌচাগারের মধ্যে বাসি খাবার মেলে। ওই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। তার পরে মেয়র ফের সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, এই অভিযান লাগাতার ভাবে চলবে।
এ দিন যে হিলকার্ট রোডেই অভিযান চলবে সেটা জানা ছিল না ওই এলাকার ফুটপাথের দোকান থেকে হোটেল এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের। ফলে পুরসভা ও ফুড সেফটি দপ্তরের হঠাৎ অভিযানে যেন ত্রাহি রব উঠে যায়।
কোনটায় কোনও খুঁত ধরা হবে সেটা আগাম অনুমান না-থাকায় পদে পদে হেনস্থা হতে হয় দোকান মালিকদের। তার মধ্যে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে পুর কর্মীরা জানতে পারেন, হোটেলে ফুড লাইসেন্স এবং ফায়ার লাইসেন্সের কোনওটাই নেই।
একটি রেস্তোরাঁয় যে ফায়ার এক্সটিংগুইশার রয়েছে, সেটিও মেয়াদ শেষ হয়েছে কি না বোঝার কোনও উপায় নেই। শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ‘খাবারের গুণমানের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। সবাইকে নিয়মবিধি মেনে চলতে হবে। শহর জুড়ে এই অভিযান চলবে।’