এই সময়, কোচবিহার: ভালো নেই কোচবিহারের মোহনরা। কারও বয়স আশি বছর। কারও একশো বা আরও বেশি। কোচবিহারের বাণেশ্বরের শিবদিঘির কচ্ছপ যা মোহন নামে পরিচিত। বয়সের হিসেবেই নয়, দেবতা জ্ঞানেই তাদের পুজো করা হয়।
জেলা প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে মোহনকে ম্যাসকট করে নানা সচেতনতা মূলক প্রচার করেছে। তবে অজানা রোগ, পথ দুর্ঘটনায় শিবদিঘির বহু কচ্ছপ তথা মোহনের মৃত্যুর পরেও টনক নড়েনি প্রশাসনের।
রাজ্য সড়কের দু’ধারে ‘গাড়ি ধীরে চালান’ প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়েও বাঁচানো যায়নি তাদের। কোচবিহার-আলিপুরদুয়ার রাজ্য সড়কেই সাধারণত গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় মোহনদের।
গত বছর পথ দুর্ঘটনা একাধিক মোহনের মৃত্যুতে বাণেশ্বর মোহন রক্ষা কমিটির পাশাপাশি ক্ষুব্ধ হন গোটা এলাকাবাসী। তবে কোচবিহারের মোহনদের রক্ষা করতে বহু আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনের পরে নানা পরিকল্পনা, কিছু কাজ হলেও পরবর্তীতে তা সে ভাবে আর এগোয়নি।
শুক্রবার ছিল বিশ্ব কচ্ছপ দিবস। এ বারের শীতেই কোচবিহারে ৩১টি মোহনের মৃত্যু হয়েছে। শিবদিঘির জল দূষণের কারণে গত কয়েক বছরে একের পর মোহনের অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, শিবদিঘি থেকে অন্য জলাশয়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য রাস্তা পারাপারের সময়ে মৃত্যুবরণ করেছে বহু মোহন। কোচবিহারের মোহন রক্ষা কমিটির সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য পরিমল বর্মন বলেন, ‘কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড শিবদিঘি রক্ষণাবেক্ষণ করে।
সেখানে ইকো সিস্টেম বলতে কিছুই নেই। পরিবেশ ঠিক না থাকার কারণেই এত মোহনের মৃত্যু হয়েছে। এখানে রসদ, খাদ্য কোনও কিছুই নেই। তবে স্থানীয় পুকুরগুলোতে সার্বিকভাবে মোহনারা এখন ভালো আছে।’
কোচবিহার রাজ আমলে এই মোহনদের শিবদিঘিতে ছাড়া হয়। এই দিঘিকে ঘিরে বহু সময়ে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হলেও বাস্তবে তার ফল মেলেনি। মোহন বা কচ্ছপ শিডিউল ওয়ান অ্যানিমেল হিসেবে বনদপ্তরে নথিভুক্ত আছে।
তাই এখানকার মোহনরা অসুস্থ হলে তা বনদপ্তর দেখভাল করে। উত্তর পূর্ব ভারতের অসম এবং বাংলাদেশের একটি অংশে এই কচ্ছপের উপস্থিতি ব্যাপক হারে আছে। গত বছর অজানা রোগে, আবার কখনও বা দুর্ঘটনার দরুণ মোহনের মৃত্যুতে প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে ধর্মঘটেরও ডাক দেওয়া হয়।