পহেলগাম হামলার বদলা নিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়েছিল ভারত। গুঁড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। তবে এই সব কিছুই জানতেন না পূর্ণমকুমার সাউ। শনিবার সকালে বললেন, ‘অপারেশন সিঁদুর কবে হয়েছে, কখনই বা হয়েছে কিছুই জানতে পারিনি।’
২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটকের মৃত্যু হয়। তার পরের দিনই পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হন পূর্ণম। ভারত 'অপারেশন সিঁদুর’ হয় ৭ মে রাতে। আর পূর্ণম মুক্তি পান ১৪ মে। স্বাভাবিকভাবে তাঁর জানার কথাও নয়। দেশে ফেরার পরই শোনেন ভারতীয় সেনার বীরগাথা।
শুক্রবার রাতে রিষড়ার বাড়িতে ফিরেছেন বিএসএফ জওয়ান। তাঁকে দেখতে ভেঙে পড়েছিল গোটা গ্রাম। ফুল, মালা, শাঁখ, উলুধ্বনি - আয়োজনে খামতি ছিল না কোনও। বিকেল থেকে এই সবেই কেটে গিয়েছে। দু’দণ্ড বসারও সময় পাননি।
শনিবার সকালে ভিড় আর নেই। কিছুটা স্মৃতিচারণের ঢংয়ে পূর্ণম বললেন, ‘দশ দিন পর আমিই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। সেনার চাকরিতে শত্রুদেশে একবার গিয়ে পড়লে আর নিজের দেশে ফেরার গ্যারান্টি থাকে না।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেছিলেন পূর্ণমের স্ত্রী রজনীকে। তাও জানেন না তিনি। পূর্ণম বলছেন, ‘দিদি ফোন করেছিলেন, কৃতজ্ঞ।’
তবে পাকিস্তানকে ছেড়ে কথা বলার পাত্র নন পূর্ণম। সাফ বলে দিলেন, ‘সবাই আমার জন্য প্রার্থনা করেছেন, অবশেষে বাড়ি ফিরেছি। ট্রেনিংয়ের সময় আমাদের শেখানো হয়, ভয় পেলে চলবে না, আমরা কোনও কিছুতেই ভয় পাই না। পাকিস্তান সবসময় আমাদের টার্গেটে থাকে।’
স্বামীর জন্য শনিবারের ব্রত রেখেছেন রজনী। স্বামী ফিরেছেন। এখন ১৬টা শনিবার মন্দিরে পুজো দেবেন। রজনী বললেন, ‘পাকিস্তানিরা শারীরিক নির্যাতন করেনি, তবে মানসিক নির্যাতন করেছে খুব। এখন ফিরে এসেছে, শান্তি। কাল সারারাত ছেলে বাবা-বাবা করেছে। আমরা কেউ ঘুমোতে পারিনি। সবাই যে এ ভাবে পাশে দাঁড়াবে, ভাবতেও পারছি না। সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’ এদিন পূর্ণমের বাড়িতে যান বিজেপির প্রতিনিধি দল। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেন তাঁরা।