তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলায় প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমান। গত বছরও তারকেশ্বর মন্দিরে জল ঢালার পাশাপাশি এই মেলায় এসেছিলেন পুণ্যার্থীরা। আর দু’মাস পরেই তারকেশ্বরে আয়োজিত হতে চলেছে শ্রাবণী মেলা। প্রায় এক মাস ধরে এই মেলা চলবে। তারকেশ্বরে আসন্ন এই মেলায় যাত্রী সুরক্ষার পাশাপাশি যাতে যে কোনও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, তার জন্য শনিবার সিঙ্গুরে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক আয়োজিত হয়। জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকে যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে কারা উপস্থিত ছিলেন?
শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, হুগলি জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না, হুগলি জেলা পরিষদ সভাপতি রঞ্জন ধারা-সহ হরিপাল, তারকেশ্বর ও চাঁপদানির বিধায়ক। এ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রেল দপ্তরের আধিকারিক, তারকেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি, দমকল বিভাগের আধিকারিক, তারকেশ্বর পুরসভা ও বৈদ্যবাটি পুরসভার প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক, বিদ্যুৎ দপ্তর-সহ জেলা প্রশাসনের একাধিক পুলিশ আধিকারিকরা।
বৈঠকে কী কী প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে?
শনিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রাস্তায় ৩৫টি লোহার লকগেট করা হবে। সমস্ত রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হবে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত ২৫টি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে। সেই সঙ্গে টোটো ও বাইক অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও করা হবে। গোটা তারকেশ্বর এলাকায় মোবাইল পরিষেবার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য টেলিকম দপ্তরকে আবেদন করা হবে। সারা রাত যাতে লোকাল ট্রেন চলে, তার জন্য রেলকে চিঠি দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি কামারকুণ্ডু থেকে বর্ধমান অবধি স্পেশাল ট্রেন যাতে চলে তারও আবেদন করা হবে।
রাস্তা ও ট্রেনে যাতে যাত্রী নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত থাকে সেই দিকে লক্ষ্য রাখা হবে। রাস্তাঘাট উন্নত করার পাশাপাশি নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি-সহ গঙ্গার ঘাটের পরিষেবাও উন্নত করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বর অবধি প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি করে অ্যাম্বুল্যান্স রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেলা শুরুর আগে হুগলি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি গাইড ম্যাপের উদ্বোধন করা হবে। সেখানে বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত রাস্তায় যাত্রীরা কী কী সুযোগ সুবিধা পাবেন, সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ও প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর থাকবে।
মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘এখানে যাতে কুম্ভমেলার মতো ঘটনা না ঘটে, মানুষকে যাতে কোনও রকম সমস্যার মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য আগাম বৈঠক করে অতিরিক্ত একাধিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।’