সেন্ট্রাল পার্কে সরতে রাজি চাকরিহারারা, আলোচনা চেয়ে সরকারকে ‘ডেডলাইন’
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ মে ২০২৫
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বিকাশ ভবনের সামনে থেকে অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহার করতে চলেছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেন্ট্রাল পার্ক লাগোয়া বইমেলার মাঠের সামনে নতুন করে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু হবে। চাকরিহারাদের বক্তব্য, তার আগে ওই জায়গায় পর্যাপ্ত জল, ছাউনি এবং আলোর ব্যবস্থা করে দিতে হবে বিধাননগর পুরসভাকে। যত দিন পর্যন্ত না সেই সব ব্যবস্থা হচ্ছে, তত দিন বিকাশ ভবনের সামনেই অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে আলোচনা চেয়ে সরকারকে ‘ডেডলাইন’-ও দিয়েছেন চাকরিহারারা।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সেন্ট্রাল পার্কের সামনে চাকরিহারাদের কর্মসূচির অনুমতি দেন। তিনি জানান, একসঙ্গে ২০০ লোক নিয়ে কর্মসূচি করা যাবে। অদলবদল করে জমায়েত হবে। আদালত রাজ্যকে খাবার জল, শৌচালয় থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেয়। সেই মতো ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বিধাননগর উত্তর থানার তরফে পুরসভাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মতো সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি করার কথা চিঠিতে বলা হয়েছে। সমস্ত ব্যবস্থা হয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকারীদের বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সরে যেতে বলবে পুলিশ।
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আন্দোলনস্থল বদলাতে রাজি হলেও আন্দোলনের পথ থেকে সরছেন না চাকরিহারারা। আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন কর্মহারা শিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি জানানো হয়েছে। সরকারের তরফে সোমবারের মধ্যে কোনও সদুত্তর না এলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে শনিবার চিঠি দেন আন্দোলনকারীরা। নিজেদের দাবি সংসদে তুলে ধরার জন্য বাংলার সমস্ত সাংসদকে চিঠি লিখবেন বলে জানান তাঁরা। পাশাপাশি চাকরি ফেরানোর কী উপায় বের করা যায়, তা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের ব্যাপারেও আবেদন জানান আন্দোলনকারীরা।
চাকরিহারা শিক্ষক বৃন্দাবন ঘোষ বলেন, ‘আমরা এত দিন ধরে আন্দোলন করছি, তার মূল কারণই হল আমাদের সঙ্গে ন্যায়বিচার হয়নি। আদালতের থেকেও বিচার পাইনি। এতগুলো মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতও দায়ী।’ আন্দোলনকারীদের দাবি, ১৫ তারিখ বিকাশ ভবনের গেট ভাঙার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে। চাকরিহারাদের দাবি, ‘ওইদিন ইচ্ছাকৃতভাবে বিকাশ ভবনের গেট ভাঙেননি চাকরিহারাদের কেউ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে এই ঘটনা ঘটেছে। ক্ষণিকের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।’
পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমরা ১৫-১৬ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ করছি। কিন্তু এই ক’দিনে শিক্ষামন্ত্রী বা অন্য কোনও মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমরা সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব। কোনও সদুত্তর না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।’ এসএসসির ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। চলতি বছরের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যদিও নতুন করে ফের পরীক্ষা দিতে নারাজ চাকরিহারাদের একাংশ।