• শিলিগুড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু, একমাসে প্রাণ গেল ১২ জনের, পুলিশ-বনকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ
    প্রতিদিন | ২৫ মে ২০২৫
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ফের হাতির হামলায় মৃত্যু। চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে উত্তরবঙ্গে ৩ জন হাতির হানায় মারা গেলেন। গত এপ্রিল থেকে মোট ১২ জন প্রাণ হারালেন। শুক্রবার রাতে এই ঘটনার পর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়ি সংলগ্ন কলাবাড়ি এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়ায়। মৃতের নাম পোশবাহাদুর ছেত্রী(৪৫)। পুলিশ ও বনকর্মীরা সেখানে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখানো হয়। লোকালয়ে হাতির হানা রোখার জন্য পাকাপাকি দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়।

    বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকিমারিতে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই শুক্রবার রাতে হাতির হামলায় আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হল। পোশবাহাদুর ছেত্রী নকশালবাড়ির মীরজাংলা এলাকার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে নকশালবাড়ি ব্লকের ভারত-নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন কলাবাড়ি জঙ্গল থেকে দুটি হাতি বেরিয়ে কলাবাড়ি মোড় এলাকায় যায়। ওই সময় রাতের খাওয়াদাওয়া শেষ করে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটছিলেন পোশবাহাদুর। অন্ধকারের মধ্যে আচমকা তিনি হাতির সামনে পড়ে যান। একটি হাতি তাঁকে শুঁড়ে তুলে মাটিতে আছড়ে মারে। হাতির আতঙ্কে গ্রামবাসীরা তটস্থ হয়ে থাকেন।

    খবর পেয়ে গভীর রাতে এলাকায় পৌঁছন পুলিশ ও বনকর্মীরা। তাঁদের দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দেহ উদ্ধারে বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। উত্তরবঙ্গে শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত হাতির হামলায় ১২ জনের প্রাণ গেল। বনদপ্তরের পানিঘাটার রেঞ্জার সমীরণ রাজ জানান, মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। পাশাপাশি এলাকায় ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক তারের বেড়া ও পথবাতির ব্যবস্থা করা হবে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, “সতর্ক করে টর্চ, পটকা সবই বিলি করা হয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীরাও দিন-রাত কাজ করছেন। কিন্তু হাতির হামলা ঠেকানো যাচ্ছে না। ভুট্টার লোভে হাতি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।”

    জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলবদ্ধ অন্তত দুশোটি হাতি। এছাড়াও রয়েছে দলছুট বেশ কিছু হাতি। ওই বুনোদের সামাল দিতে কালঘাম ছুটছে বনকর্মীদের। নকশালবাড়ির মীরজাংলা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিন জঙ্গল থেকে হাতি বার হয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল এসকে মোলে বলেন, “দলবদ্ধ হাতিদের নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ওরা শান্ত থাকে। বিপজ্জনক দলছুট হাতি। ওরা ভয়ঙ্কর মারমুখী। সেটাই বিপদের কারণ হয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)