পাঁশকুড়ার সেই ছাত্রের মৃত্যুর তিনদিন পরেও হয়নি অভিযোগ
বর্তমান | ২৫ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পাঁশকুড়া: পাঁশকুড়ার গোসাইবেড় বাজারের সেই ছাত্রের মৃত্যুর তিনদিন পরও থানায় কোনও অভিযোগ জানায়নি পরিবার। কৃষ্ণেন্দু দাস নামে ওই ছাত্রের আত্মহত্যার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারের দিকে আঙুল তোলা হলেও মৃতের পরিবার থেকে এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। যেকারণে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপও হয়নি। তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। উল্টে সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বাড়িতে হামলার ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুইসাইড নোট লিখে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দুর বিষ খাওয়ার ঘটনায় উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন অনেকে। কিন্তু, শনিবার পর্যন্ত ছাত্রের পরিবার থেকে পাঁশকুড়া থানায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। নিহত ছাত্রের সৎবাবা জগন্নাথ বেরা বলেন, কৃষ্ণেন্দুর মামা বিপ্লব ঘড়া আসার পর থানায় অভিযোগ করা হবে। বৃহস্পতিবার রাতে দেহ আসার পর তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। পুলিস ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। তারপর আমরা অনেকটাই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছি। সেভাবে পাশে কেউ নেই। তাই অভিযোগ দায়ের করা যাচ্ছে না। কৃষ্ণেন্দুর মা সুমিত্রা দাসের বাপেরবাড়ি পিংলা থানার রাগপুর গ্রামে। মালিগ্রামে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়েছিল। এক মেয়ে ও এক ছেলে। বছর দশেক আগে স্বামীর মৃত্যু হয়। এরপর আট বছর আগে গোসাইবেড় বাজারের জগন্নাথ বেরাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। মেয়ে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ছেলে কৃষ্ণেন্দু সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। কৃষ্ণেন্দুর আত্মহত্যার পর যেভাবে অভিযোগ দায়ের নিয়ে টালবাহনা চলছে তানিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু প্রশ্ন নয়, কৃষ্ণেন্দুর নিজের ঠাকুরদা অশোককুমার দাস শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযোগ জানাতে পাঁশকুড়া থানায় হাজির হয়েছিলেন। অভিযোগ লেখার পরও তিনি জমা না করে ফিরে যান বলে তমলুকের এসডিপিও আফজল আব্রার জানিয়েছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামনে আসার পর পুলিসের পক্ষ থেকে সিভিককে ক্লিনচিট দেওয়া শুরু হয়েছে। কারণ, ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বাজারের মধ্যে কৃষ্ণেন্দুকে তার মা মারধর করার সময় ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মা বলেন, ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় আমার ছেলের দোষ নেই। কিন্তু, তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর শিশুর মৃতদেহ যেভাবে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে প্রথমে আমার বাড়ির উঠানে আনা হল, তা থেকেই বোঝা যায়, এরমধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। নাগরিক সুরক্ষা কমিটির মুখপাত্র নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, গোসাইবেড় এলাকায় চিপসের প্যাকেট চুরির অপবাদ ঘিরে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে আমরা এসপিকে স্মারকলিপি দিয়েছি।