নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: প্রথমবার গ্রামের কাঁচা রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়ছে। আর কাদা মাটি ঠেলে যেতে হবে না। বারাবনি ব্লকের শ্যামাপুর, শিরিষডাঙা সহ পাঁচটি গ্রামের মানুষ যখন স্বপ্ন দেখছে, তখন সরকারি রাস্তার নির্মাণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্থানীয় বালি কারবারিরা। তাদের অনৈতিক আবদার, বর্ষাকালে যখন কারবার বন্ধ থাকবে, তখন গ্রামের রাস্তা করতে হবে। এখন রাস্তার কাজ করলে ব্যবসার ক্ষতি হবে। তবে, শুধু মৌখিক আবেদন জানিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি তারা। শিরিষডাঙার একটি কালভার্ট তারা ভাঙতে দেয়নি। এমনকী, যেখানে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে ওভারলোডেড বালির লরি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ফলে, কাজ থমকে যায়। বিষয়টি নজরে আসে বারাবনি ব্লক প্রশাসনের। কয়েক কোটি টাকার রাস্তা তৈরির কাজ থমকে যাওয়ার খবরে শোরগোল পড়ে যায় প্রশাসনিক মহলে। রাস্তা তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে পড়ে যান গ্রামবাসীরাও। এরপরই ‘অ্যাকশন’ নেয় প্রশাসন। শুক্রবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিং। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে কালভার্টটি ভাঙা করান। স্পষ্ট নির্দেশ দেন, নির্মাণকাজ হওয়ার সময়ে কোনওভাবেই এই রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল করবে না। নির্মাণকাজ হয়ে যাওয়ার পরও এই রাস্তা দিয়ে পূর্বনির্ধারিত ওজনের গাড়িই চলাচল করবে। কোনও ওভারলোডেড গাড়ি এখানে চলতে দেওয়া হবে না। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাবনি ব্লকের জামগ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামাপুর ঘাট থেকে রসুলপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ২১ কোটি টাকা খরচে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরুও হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামাপুর, শিরিষডাঙা ও সন্ন্যাসী এই তিনটি গ্রামের উপর দিয়ে পাকা রাস্তাটি যাবে। পাশেই রয়েছে জামজুড়ি ও খয়েরবনি গ্রাম। ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারাও এই রাস্তার উপরেই নির্ভরশীল। স্থানীয় পঞ্চায়েতের দাবি, মোট পাঁচটি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করবে। এক মাস আগে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন থেকেই বালি কারবারিরা ঘোট পাকাতে থাকে। তারা নানা অছিলায় কাজে বাধা দিতে থাকে। অবশেষে শুক্রবার থেকে কঠোর অবস্থান নেয় প্রশাসন। যারফলে রাস্তা নির্মাণের কাজে গতি এসেছে। স্বভাবতই খুশি এলাকার মানুষজন।
জামগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেশব রাউত বলেন, এক মাস ধরে রাস্তা নির্মাণে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। অবশেষে তারা পিছু হটেছে।