নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: তমলুক পুরসভার উদ্যোগে শনিবার রাজবাড়ি ময়দানে এভারেস্ট জয়ী কনস্টেবল লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলকে সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিন সকালে কলকাতা থেকে বাবা-মা ও আত্মীয়রা এভারেস্ট জয়ীকে নিয়ে তমলুকে আসেন। রাজবাড়ি ময়দানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, ভাইস চেয়ারপার্সন লীনা মাভৈ, তমলুকের এসডিপিও আফজল আব্রার, থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলার থেকে স্থানীয় ধলহরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, মথুরী কল্যাণিকা বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক সহ অনেকেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাক্ষী ছিলেন। এদিন সন্ধ্যায় তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র মথুরী গ্রামে গিয়ে এভারেস্টজয়ীকে সংবর্ধনা জানান।
শুক্রবার কাঠমাণ্ডু থেকে ফ্লাইটে কলকাতায় পৌঁছন লক্ষ্মীকান্ত। বাবা বনমালিচরণ মণ্ডল, মা বিজনলতা মণ্ডল, ভাই শ্রীকান্ত সহ পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। ফুল ও জাতীয় পতাকায় সাজানো গাড়িতে চড়ে লক্ষ্মীকান্ত তমলুকের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ময়দানে হাজির হন। আগে থেকেই পুরসভার চেয়ারম্যান সহ অন্যান্যরা তাঁর অপেক্ষায় ছিলেন। এভারেস্ট জয়ীকে দেখার জন্য সাধারণ মানুষজনও ভিড় করেছিলেন। পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নানা পেশার মানুষজন রাজবাড়ি ময়দানে হাজির হয়। আগামী সোমবার জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে পুলিস লাইনে লক্ষ্মীকান্তবাবুকে সংবর্ধনা জানানো হবে।
লক্ষ্মীকান্তবাবু কলকাতা পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মার নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কর্মরত। তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স, অ্যাডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কোর্স সম্পূর্ণ করেছেন। ২০২৪ সালে মাউন্ট কুন ও পিনাকেল পিক জয় করেছেন। গত ১২ এপ্রিল এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করার লক্ষ্যে তমলুক থানার মথুরীর গ্রাম থেকে রওনা দিয়েছিলেন। গত ১৯ মে সকাল সাড়ে ৮টায় লক্ষ্মীকান্ত এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন। তাঁর এই সাফল্যে গোটা তমলুক গর্বিত।
এদিন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লক্ষ্মীকান্তের বাবা তথা প্রাক্তন এনভিএফ কর্মী বনমালিবাবু বলেন, আমার ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। ছেলেকে নিয়ে গর্ববোধ করছি। আমার ছেলে এখন গোটা জেলার গর্ব। সকলের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগ করে নিলাম। দীপেন্দ্রনারায়ণবাবু বলেন, লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল আজ গোটা বাংলার গর্ব। পুরসভার পক্ষ থেকে এদিন তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হল। তমলুকের মহকুমা পুলিস অফিসার এবং থানার আইসি আমাদের সহযোগিতা করেছেন। আমরা লক্ষ্মীকান্তের আরও সাফল্য কামনা করছি।
লক্ষ্মীকান্ত বলেন, মাউন্টেরিয়ারিংয়ের মধ্যে অ্যাডভেঞ্জার মিশে রয়েছে। একটা মিশনকে সামনে রেখে এভারেস্টে যাত্রা শুরু করেছিলাম। সেই মিশন সফল হওয়ায় ভালো লাগছে। ২০১৮ সাল থেকে দার্জিলিংয়ে পর পর তিনটি কোর্স করেছি। অনেকে মাইন্টেরিয়ারিং কোর্স না করে পর্বত শৃঙ্গে যান। তবে, আমার পরামর্শ, মাউন্টেরিয়ারিং কোর্স করে যাওয়াই ভালো। এধরনের শৃঙ্গ জয়ের জন্য রওনা দিতে সবমিলিয়ে প্রায় ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়। নগরপাল সাহেব আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আর্থিক সহযোগিতা পেতে আমার সমস্যা হয়নি।