• হাসনাবাদে বাংলাদেশি ড্রোন, ১০ মিনিটের ‘রেকি’ ঘিরে চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ২৫ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে ড্রোনের ‘অনুপ্রবেশ’। শুক্রবার রাতের এই রহস্যজনক ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল আলোড়ন। প্রায় ১০ মিনিট ধরে ভারতীয় আকাশসীমায় ‘রেকি’ চালিয়ে রহস্যজনক তিনটি ড্রোন বাংলাদেশের দিকে উড়ে যায়। ‘অপারেশন সিন্দুর’ পর্বে পাকিস্তানের নতুন ‘সখা’ বাংলাদেশ থেকে শক্তিশালী ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনায় জোরদার তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ, পুলিস ও বিভিন্ন গোয়েন্দা এজেন্সি। 

    শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ কাটাখালি সেতুতে বসে মোবাইলে আইপিএলের ম্যাচ দেখছিলেন রহিম, সুরজ ও দীপঙ্করের মতো স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তাঁদের কথায়, ‘বেশ অন্ধকার ছিল। হঠাৎই লক্ষ্য করলাম, আকাশে আলোর ছটা। একটা ড্রোন মাথার উপর উড়ছিল, বেশ প্রমাণ সাইজের, ল্যাজের দিকে লাল আলো দপদপ করছে। আওয়াজও হচ্ছিল। মোবাইলে রেকর্ড করেছি সবকিছু। এরপর আরও দুটো ড্রোন উড়ে আসে বাংলাদেশের দিক থেকে। বেশ কিছুক্ষণ এদিক-ওদিক চক্কর কেটে ফের বাংলাদেশের দিকে চলে যায়।’ স্থানীয় সূত্রে খবর, হাসনাবাদের কাটাখালি সেতু এবং স্থানীয় বরুণহাট-রামেশ্বরপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের উপর দিয়ে উড়ে যায় ড্রোনগুলি। স্থানীয় মানুষের অনেকেই ড্রোন অনুপ্রবেশ এবং ফের বাংলাদেশে উড়ে যাওয়ার দৃশ্য মোবাইল বন্দি করেন। ঘটনার খবর পেয়ে বিএসএফ এবং পুলিসের আধিকারিকরা রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেন। শনিবারও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সেখানে গিয়েছিলেন। 

    প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং তার লাগোয়া শ্যামনগরের নীলডুমুর এলাকা থেকেই ওড়ানো হয়েছিল ড্রোনগুলি। নজরদারি চালাতেই ‘জিরো লাইন’ গৌড়েশ্বর নদী পেরিয়ে সেগুলি হাসনাবাদে ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকেছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপারেশন সিন্দুর পর্বে শত্রুদেশ হিসেবে সামনে আসা তুরস্কের কাছ থেকে সম্প্রতি ‘বেরাকটার টিবি২ ড্রোন’ কিনেছে মহম্মদ ইউনুসের সরকার। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরাম সীমান্ত বরাবর বিভিন্ন সেনা ছাউনি ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সেক্টর অফিসে রাখা হয়েছে তুরস্কের ড্রোনগুলি। শুক্রবার রাতে সেরকমই তিনটি ড্রোন ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকেছিল বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। কারণ যে জায়গা থেকে ড্রোনগুলি ওড়ানো হয়েছিল, সেই সাতক্ষীরা সদরে রয়েছে বাংলাদেশের সেনা ক্যাম্প এবং বিজিবির ৩৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন। বিজিবির ১৭ নম্বর ব্যাটালিয়ন রয়েছে শ্যামনগরের নীলডুমুরে। সন্দেহের তির তাই বাংলাদেশের সেনা-বিজিবিকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্কের এই ড্রোনগুলি মাঝারি উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। নজরদারি ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তোলার পাশাপাশি বোমা বহন করতেও সক্ষম। তবে শুক্রবার রাতের অনুপ্রবেশকারী ড্রোনগুলি সম্পর্কে বিএসএফের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
  • Link to this news (বর্তমান)