নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: এক যুব তৃণমূল কর্মীকে ফোন করে অশ্রাব্য গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল বরানগরের আইএনটিটিইউসি নেতা শঙ্কর রাউতের বিরুদ্ধে। কলকাতার ওই যুব কর্মী রাহুল জানা বরানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার ডালিয়া মুখোপাধ্যায়ের আত্মীয়। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ ওই কথোপকথনের ক্লিপিংস সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ইতিমধ্যেই সেই অডিও ক্লিপিংস ভাইরাল হয়েছে। বর্তমান অবশ্য সেই ক্লিপিংসের সত্যতা যাচাই করেনি। ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপিংসকে ঘিরে বরানগরের রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে এসেছে শাসকদলের কোন্দল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এক প্রোমোটারকে কাজ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তর কলকাতা যুব তৃণমূল কর্মী রাহুল জানার বিরুদ্ধে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ডালিয়া মুখোপাধ্যায় তাঁর আত্মীয়া। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আইএনটিটিইউসি-র নেতা শঙ্কর রাউত ফোন করে রাহুল জানাকে ব্যাপক হুমকি দেন। ফোনে শঙ্করবাবু তাঁকে বলেন, প্রোমোটারির কাজ কেন বন্ধ করা হল। রাহুল জবাবে বলেন, কাউন্সিলারকে বাদ দিয়ে ক্রিম খেতে দেব না। এরপরই দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শঙ্করবাবু। রাহুল আরও বলেন, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করি। তুমিও তৃণমূল করো। তারপরও এভাবে হুমকি দিচ্ছ, এটা ঠিক নয়। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি তাঁকে রীতিমতো দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শঙ্কর রাউত। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঢুকলে হাত পা ভেঙে দেওয়ার শাসানিও দেন তিনি।
হুমকি ফোন প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের অভ্যন্তরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শঙ্কর রাউত বলেন, ‘একটি প্রোমোটিং সাইটে বাইরে থেকে দলবল নিয়ে গিয়ে টাকা চেয়ে হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় রাহুল নামে ওই যুবক। আমরা যেহেতু দলের কর্মী, সেহেতু দলের বিভিন্ন স্তর থেকে ফোন আসে আমার কাছে। তাই ওকে ফোন করে ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেটাই বলেছি। এর বাইরে কিছু বলব না।’ যদিও রাহুল পাল্টা জানিয়েছেন, ‘বরানগর জুড়ে দাদাগিরি চালাচ্ছে শঙ্কর রাউত নামে ওই নেতা। দলের নেতা কর্মীরা তো বটেই সাধারণ মানুষও তিতিবিরক্ত। আমাকেও ফোন করে হুমকি দিয়েছেন।’ রাহুলের পাল্টা হুঙ্কার, তবে উনি যে ভাষা বোঝেন, সেই ভাষাতেই ওঁনাকে জবাব দেওয়া হবে। এধরণের অডিও প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভাইরাল অডিওটি শুনেছি। শঙ্কর রাউত যদি এটা করে থাকেন, সেটা দলীয় স্তরে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে উল্টোদিকে থাকা রাহুল জানা যদি তৃণমূলই করে, তাহলে ওই অডিও বিরোধী দলের কাছে কী করে গেল, তাও খতিয়ে দেখা দরকার’।