‘এত রক্ত দেখে নার্ভাস লাগছিল’, দুর্ঘটনাগ্রস্তকে নিজের গাড়িতে হাসপাতালে পাঠালেন সাংসদ
প্রতিদিন | ২৫ মে ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: জনতার জন্যই জনপ্রতিনিধি। তাই আগে জনতার কাজ, তারপর দলীয় কর্মসূচি। এই নীতিতে বিশ্বাসী আরামবাগের নতুন সাংসদ মিতালি বাগ। রবিবারও তাই দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতকে উদ্ধারকাজে হাত বাড়িয়ে দিলেন। নিজের গাড়ি করে দুর্ঘটনাগ্রস্তকে হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নিলেন তিনি। পরে অবশ্য সাংসদের গাড়ির আর দরকার হয়নি। দলীয় কর্মীরা নিজেদের গাড়ি করেই হাসপাতালে পৌঁছে দেন। এনিয়ে সাংসদ মিতালি বাগ বলেন, ”এত রক্ত দেখে আমার খুব নার্ভাস লাগছিল। তাই যত দ্রুত সম্ভব, আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলি।”
রবিবার দুপুরে আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ দলের এক নিজের কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন। সেসময় পুরশুড়া বিডিও অফিসের সামনে রাস্তার উলটোদিকে একটি বাইক দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বাবা-ছেলে বাইকে থাকা অবস্থায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাইক আরোহী ছেলেটি গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে ছিলেন। স্থানীয়রা সকলে তাঁকে উদ্ধার চেষ্টা করেছিলেন। রাস্তা ততক্ষণে রক্তে ভেসে গিয়েছে। দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে এহেন দৃশ্য চোখে পড়ায় গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সাংসদ মিতালি বাগ। জানতে পারেন, অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দেওয়া হলেও তখনও তা পৌঁছয়নি। তখন সাংসদ নিজের গাড়িতে আহত ছেলেটিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। তাতে তাঁর সঙ্গে থাকা দলের অন্যান্য কর্মীরা জানান, তাঁরাই হাসপাতালে পৌঁছে দেবেন, সাংসদের গাড়ি দরকার হবে না।
বিষয়টি নিয়ে মিতালি বাগ বলেন, ”আমার একটা কর্মসূচি ছিল পুরশুড়ায়। যাওয়ার পথে একটা জায়গায় শুনলাম, একজন খুব চিৎকার করছে। আমি গাড়ি ঘুরিয়ে সেখানে পৌঁছই। দেখি, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। একজন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। এত রক্ত দেখে আমারও খুব নার্ভাস লাগে। জানতে চাই, অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দেওয়া হয়েছে কি না। স্থানীয় জানায় যে অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হবে। তখন আমি বলি, আমার গাড়িতেই যেন ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্মসূচিতে যেতে ১০ মিনিট দেরি হলে সেটা ম্যানেজ করা যাবে। কিন্তু একটা মানুষ প্রাণের ব্যাপার, সেখানে তো দেরি করা যায় না। তবে আমার সঙ্গে থাকা কর্মীরা জানান যে আমার গাড়ির দরকার হবে না। ওঁরা নিজেদের গাড়ি করে পৌঁছে দেবেন।” সাংসদ মনে করেন, তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েছেন জনতারই ভোটে। তাই বিপদে জনতার পাশে থাকা তাঁর সবচেয়ে জরুরি কর্তব্য। সেই কর্তব্যবোধেই কর্মসূচিতে দেরি করেও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।