• একই মিছিলে অনুব্রত-কাজল, তবে মঞ্চে দেখা গেল না কেষ্টকে
    এই সময় | ২৬ মে ২০২৫
  • রামপুরহাটে তৃণমূলের মহামিছিল। রবিবারের সেই মিছিলে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ-সহ জেলার প্রথম সারির নেতারা। তবে মিছিলে থাকলেও কাজল-কেষ্ট এ দিন মুখোমুখিই হননি। শুধু তাই নয়, ঘটেছে আরও একটা নজরে পড়ার মতো ঘটনা। জেলা সভাপতি পদ থেকে অনুব্রতকে ছেঁটে ফেলা, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলা সংগঠনের শীর্ষ পদে বসানো এবং কাজলের সঙ্গে কেষ্টকে কোর কমিটিতে জুড়ে দেওয়ার ঘটনার পর, রবিবার প্রথম বার এত বড় মিছিল জেলায়। সেই মিছিলে ছিলেন কেষ্ট-কাজল দু’জনই, তবে দু’প্রান্তে। এমনকী বীরভূম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে অনুব্রতকে ডাকলেও তিনি মঞ্চে পৌঁছলেনই না। মিছিল শেষে হুডখোলা গাড়িতেই উল্টো পথ ধরলেন।

    বীরভূমে এখন রাজনৈতিক ছবিটায় অনেকটাই বদল এসেছে। এক সময় অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন এ জেলায় তৃণমূলের শেষ কথা। বছরের পর বছর অনুব্রত যে পদে থেকে জেলায় সংগঠন পরিচালনা করেছেন, সম্প্রতি সেই জেলা সভাপতি পদটাই বীরভূম থেকে তুলে দিয়েছে তৃণমূল। বদলে চেয়ারম্যান পদকেই সর্বোচ্চ পদ করে, বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে রেখেছে সেখানে। ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে কোর কমিটির। যেখানে কাজল শেখ, শতাব্দী রায়ও রয়েছেন। অন্য দিকে কাজল শেখ বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি। সে পদও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

    সেই আবহেই রবিবার জেলায় এক মিছিল হয়। অনুব্রত মণ্ডল জেলার তিনটি মহকুমা নিয়ে এই মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন রামপুরহাট থেকে সেই মিছিলের সূচনা হয়। রামপুরহাটের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার, হাজার মানুষ মিছিল করে এসে জমায়েত করেন পাঁচমাথা মোড়ে। প্রতিটি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কোর কমিটির এক একজন সদস্য।

    বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল আসে পাঁচমাথা মোড়ে তৃণমূলের যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, তার সামনে। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন কাজল শেখ, শতাব্দী রায়, অসিত মাল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তার আগে মিছিলে কাজল শেখের হুডখোলা গাড়িতেই ছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল। অনুব্রতর গাড়িতে বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহরা।

    অনুব্রতদের গাড়ি মঞ্চের সামনে আসতেই আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মঞ্চে আসার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলকে মঞ্চে যেতে দেখা যায়নি, পরিবর্তে যে হুডখোলা গাড়িতে করে তিনি মিছিল করছিলেন, তার উপরে দাঁড়িয়েই মাইক্রোফোন হাতে বক্তব্য রাখেন। পরে আবারও মিছিলের সঙ্গে বেরিয়ে যান। পৌঁছে যান তৃণমূলের পার্টি অফিসে। পরে পার্টি অফিস থেকে নিজের গাড়িতে চেপে রওনা দেন বোলপুরের পথে।

    প্রশ্ন উঠছে, কোথাও কি অনুব্রতর একটু গা ছাড়া ভাব? আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘তিনি মিছিলে ঘুরছেন। তা হলে কী করে এখানে আসবেন?’ তবে নিন্দুকেরা বলছেন, কাজল শেখের উপস্থিতি লক্ষ্য করেই মঞ্চে ওঠেননি কেষ্ট।

  • Link to this news (এই সময়)